অপসোনিনে শ্রমিক ছাঁটাই: ছয় দিন ধরে চলা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত নগরী
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
বরিশালে অপসো স্যালাইনে ৫ শতাধিক শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পর ছয় দিন ধরে চলা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে আছে নগরী। কাজ ফিরে পেতে প্রতিদিন দিনভর নগরীর প্রধান সড়কের একটি বগুড়া রোড অবরোধ করে কারখানার সামনে বিক্ষোভ করছে। দিন শেষে রাতভর একই কায়দায় কারখানা মালিকপক্ষের শ্রমিকরা সড়ক আটকে রাখে পাহারার নামে। এতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীরা।
অন্যদিকে কম টাকার শ্রমিক দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাজ হারানো শ্রমিকরা। তবে মালিক পক্ষ বলছে, প্রতিষ্ঠানের স্টেরিপ্যাক বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় আইনানুযায়ী এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ছাঁটাইয়ের শিকার শ্রমিকদের কাজ ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলনে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ বরিশালের অন্যান্য কারখানার শ্রমিকরাও। ইতোমধ্যে বাসদের বরিশাল জেলা সমন্বয়কারী ডা. মনীষা চক্রবর্তী অন্যান্য শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলনে যোগ দেয়। বরিশাল মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন রোববার কাজ হারানো শ্রমিকদের আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে আন্দোলনে অংশ নেন। অন্যদিকে কারখানা মালিকপক্ষের অনুগত শ্রমিকরাও রয়েছে পাল্টা অবস্থানে। দুইপক্ষের শ্রমিকরা দিনরাত গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি আটকে রাখায় জনভোগান্তি চরমে উঠেছে। এছাড়াও দিন দিন দুইপক্ষের শ্রমিকরা মুখোমুখি অবস্থানে থাকায় সংঘর্ষে জড়ানোর আশঙ্কা বাড়ছে। তাই অবিলম্বে বিষয়টি সমাধানের দাবি জানিয়েছেন কাজ হারানো শ্রমিকরাসহ নগরবাসী।
নগরীর মুন্সিগ্রেজের বাসিন্দা সোহাগ খান বলেন, সারাদিনরাত সড়কটি আটকে আছে। ফলে প্রতিদিন ভোগান্তি মাথায় নিয়ে গন্তব্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এই সড়কটি বন্ধ থাকায় আশপাশের সড়কেও চরম যানজট দেখা দিচ্ছে। এছাড়া দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে এই দুর্ভোগ থেকে দ্রুত উত্তরণের দাবি জানান তিনি।
বরিশাল মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, একটি কারাখানার প্রাণ হচ্ছে শ্রমিকরা। তাদের কাজ চলে যাওয়ায় চরম অনিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে তারা। এই বিষয়টি নিয়ে সমাধানে মালিকপক্ষকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাসদের বরিশাল জেলা সমন্বয়কারী ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, যে শ্রমিকদের শ্রমে মালিকদের এসি চলে সেই শ্রমিকদেরকে আজকে রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদি দ্রুত সময়ে তাদের কাজ ফিরিয়ে দেওয়া না হয় তাহলে বরিশালের সব শ্রমিকদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনের মধ্যদিয়ে দাবি আদায় করা হবে। এই বিষয়ে বরিশালে অপসো স্যালাইন মালিক পক্ষের বক্তব্য জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর শ্রমিকদের ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। একদিন পর ২৯ অক্টোবর শ্রমিকদের কাছে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কাগজ পাঠানো হয়। এরপর থেকে কাজ হারানো শ্রমিকরা লাগাতার আন্দোলন করে যাচ্ছে।
								


                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
Post Comment