আমি ইলিশ শিকার করি না, তবে প্রয়োজন হলে ব্যবস্থা করে দিতে পারি: আল আমিন
বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি ।।
ইলিশ প্রজনন মৌসুমে সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় প্রকাশ্যে চলছে এই অবৈধ ব্যবসা, ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ ও সচেতন মহল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নিয়ামতি বন্দর বাজার, মহেশপুর বাজার সহ আশপাশের বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খোলামেলাভাবে ইলিশ বিক্রি করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সহ একটি ভয়ংকর সিন্ডিকেট।
আর এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মহেশপুরের আলামিন নামের এক যুবক। নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও কম দামে এসব ইলিশ বিক্রির খবর ছড়িয়ে পড়ায় ক্রেতারাও গোপনে ইলিশ ক্রয় করে নিচ্ছে। এতে মাছ ধরা ও বিক্রি বন্ধে সরকারের কঠোর নির্দেশনা কার্যত ভেস্তে যাচ্ছে।
ইলিশ বিক্রেতা আল আমিন এমডি আল আমিন নামের তার ব্যক্তিগত ব্যবহারিত ফেসবুকে ইলিশ বিক্রির একটি ছবি পোস্ট করেছেন। যা এলাকায় এখন সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এ বিষয়ে আলামিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি ইলিশ মাছ নদী থেকে শিকার করি না। তবে মাছের প্রয়োজন হলে জেলেদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা করে দিতে পারব।
১৭ অক্টোবর (শুক্রবার) সকাল ১০ টায় নিয়ামতি ইউনিয়নের বিষখালী নদীর পাড়ে গেলে দেখা যায়, প্রকাশ্যে জেলেরা দলবেঁধে নদীতে ইলিশের জাল ফেলছে। অনেকে আবার ইলিশ শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে বিক্রয় করার জন্য। অনেক স্থানীয় জেলেরা তাদের নিজেদের বাড়িতে এখন বাজার বসিয়ে ইলিশ মাছ বিক্রি করে আসছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছাত্র ছায়ায় জেলেরা এখন অবাধে নদী থেকে মাছ শিকার করছে।
এরপর সেখানেই অস্থায়ী হাটে ইলিশ বিক্রি করছেন তারা। এ সময় নদীতে মৎস্য বিভাগের কাউকে অভিযান চালাতে দেখা যায়নি। এখানে পাইকারি দরে ১ কেজির বেশি ওজনের ইলিশ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা ও ছোট ইলিশ ৫০০-৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন জেলেরা।
এছাড়াও একই চিত্র দেখা গেছে উপজেলার, কলসকাঠী ইউনিয়নের পান্ডব নদীতে ও কবাই ইউনিয়নের কারখানা নদীতে ও ফরিদপুর, দুর্গাপাশা, ইউনিয়নের তেতুলিয়া নদীতে। এসব এলাকায়ও নদী থেকে ইলিশ শিকার করে প্রকাশ্যে বিক্রয় করে আসছে স্থানীয় জেলেরা।
স্থানীয় এক জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নিয়ামতি ইউনিয়নের বিষখালি নদীতে দিনের চেয়ে রাতের আঁধারে জাল ফেলে ইলিশ ধরছে জেলেরা। পরে ভোরে গোপনে বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইলিশের প্রজনন রক্ষায় গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন দেশব্যাপী ইলিশ ধরা, পরিবহন, মজুত ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, নিষিদ্ধ সময়ে কঠোর নজরদারি চালানো হচ্ছে। তবে নিয়ামতি ইউনিয়নের বিষখালী নদীতে কিছু জেলেরা মাস শিকার করছে আমিও শুনেছি। সেখানে আমরা অভিযান পরিচালনা করব।
নদীতে মাছ শিকার যাহারা করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে দণ্ড ও জরিমানাও দেওয়া হবে। তবে জনবল সংকটের কারণে শতভাগ সফলতা অর্জন করা যাচ্ছে না বলেও তিনি জানান।
Post Comment