আমুর ক্ষমতার জোরে ১৮ একর জমি দখলের অভিযোগ অপসোনিনের বিরুদ্ধে
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
এবার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর ক্ষমতার দাপটে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অপসোনিন ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেড কোম্পানি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা মিসকেস সাজিয়ে আমির হোসেন আমুর ক্ষমতার প্রভাবে ১৮ একর ১৫ শতাংশ জমি আত্মসাত করেছেন। আর এতে সহযোগিতা করেছেন এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও সাবেক সার্ভেয়ার বজলুর রহমান বজলু।
এমন অভিযোগ তুলে আমির হোসেন আমু ও অপসোনিন ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূক্তভোগিরা। রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। ভূক্তভোগী পরিবারগুলোর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বোরহান উদ্দিন মিলন।
তিনি বলেন, ফ্যাসিষ্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দোসর সাবেক খাদ্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু অপসোনিন ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের অংশীদার। এছাড়া রাকিব খান ও রউফ খান পরস্পর মামাতো-ফুফাতো ভাই। তাঁরা আওয়ামী লীগের আমলে আমির হোসেন আমুর ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া মিস কেস ২৩০/৬৫-৬৬ নম্বর বন্দোবস্তের মাধ্যমে তাদের ৭ পরিবারের প্রায় ১৮ একর ১৫ শতাংশ ভূমি আত্মাসাত করে নেয়।
মিলন আরও বলেন, নলছিটি এসিল্যান্ড অফিসের ১২ নম্বর রেজিস্টার বইতে মিস কেস ২৩০/৬৫-৬৬ এর কোন অস্তিত্ব নেই। বরং ওই রেজিস্টারে তিনটি বন্দোবস্ত কেস দায়ের রয়েছে। কিন্তু নলছিটি জেএল নম্বর ১২৭ পশ্চিম চর দপদপিয়ার জমি অপসোনিন কোম্পানির মালিক রাকিব খানের নামে ৪৩১৯/১৯ দলিল এবং ৩৮২৮/২০০০ নম্বর দলিল বরিশাল সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে রেজিস্ট্রি হয়, যা ১৯৬৬ সালের আইনে সম্পূর্ণ অবৈধ। যত দলিল অপসোনিন কোম্পানিকে দেয়া হয়েছে এর মূল মালিকানা স্বত্ব ২৩০/৬৫-৬৬ মিস বন্দোবস্ত কেসটি দলিলে উল্লেখ্য নাই।
এসকল দলিলে জাগুয়া ইউনিয়ন জেএল ১২৭ নম্বর উল্লেখ্য করেছে, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে জাগুয়া ইউনিয়ন জেএল নম্বর ৫৪। সকল দলিল জাল জালিয়াতি মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে।
তাছাড়া এই রাকিব খান ও রউফ খান কীর্তনখোলা নদীর স্রোত গতি পরিবর্তন করে, নদী ভরাট ও দখল করে পরিবেশের ভারসাম্যের ব্যাঘাত ঘঠিয়ে শিল্প কারখানা গড়ে তুলেছেন। শত শত অসহায় গরীব মানুষের জমি এবং সরকারের খাস জমি অবৈধভাবে জবর দখল করেছে। এর সব কিছুর নেপথ্যে রয়েছে রয়েছেন আমির হোসেন আমু।
তিনি বলেন, এ নিয়ে ঝালকাঠি আদালতে মামলা করেছেন ভূক্তভোগীরা। মামলায় ২৩ বছর তারা কোর্টে হাজির না হয়ে, কোর্ট অবমাননা করেছেন। তারা অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের মাধ্যমে আইন কানুন আদালতকে তোয়াক্কা না করায়, তাদের বিরুদ্ধে আদালত জি আর মামলা নং ৩১/২৫ এবং সি আর ১৪৭/২৫ নং মামলায় গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে।
আমির হোসেন আমুর অবৈধ ক্ষমতার দাপটে বহু অসহায় গরীব মানুষের ভূমি জবর দখল করে নিয়েছে। জাল-জালিয়াতির মূল হোতা অপসোনিন ফার্মার অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী বজলু রাঢী, মো. পারভেজ আহমেদ, রফিক আহম্মেদ, জসিম উদ্দিন, ফিরোজ আহমেদ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ভূক্তভোগী জালাল আহমেদ খান, জাহাঙ্গীর খান, সিরাজুল ইসলাম গাজী, সাইফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সাইফুল।
Post Comment