আ.লীগ নেতাকর্মীদের হাতে হাজার হাজার আগ্নেয়াস্ত্র!
অনলাইন ডেক্স ।।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে প্রায় ৮২ হাজার আগ্নেয়াস্ত্র থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। আর এই আগ্নেয়াস্ত্রগুলো ব্যবহার করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চালানো হয় নির্মম হত্যাকাণ্ড। তবে প্রশ্ন হলো এই বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র আ. লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে কিভাবে এলো? কোথা থেকে এই মরণাস্ত্রগুলো আমদানি করা হলো? এর এই অস্ত্রগুলো লাইসেন্স কিভাবে পেল? আর এতো বিপুলসংখ্যক অস্ত্রের কতটুকুইবা উদ্ধার করা হয়েছে?
তথ্যমতে, আ. লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে বিভিন্ন ধরণের প্রায় ৮২ হাজার আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এগুলোর মধ্যে একে-৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেল, এম-১৬ অ্যাসল্ট রাইফেল, চাইনিজ রাইফেল, পিস্তল, রিভলভার, পাইপগান এবং একনলা ও দোনলা বন্দুকও রয়েছে। এর মধ্যে একে-৪৭ রাশিয়ার এবং এম-১৬ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। এসব অস্ত্রের বড় একটি অংশ এসেছে আওয়ামী শাসনামলে দলীয় বিবেচনায় লাইসেন্স দেওয়ার মাধ্যমে।
আ. লীগ নেতাকর্মীদের কাছে রয়েছে একে-৪৭, এম-১৬-এর মতো আধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল। এ ছাড়া ওয়ালথার পিপি-জাতীয় ইউরোপীয় প্রযুক্তির আধুনিক পিস্তলও তাদের কাছে রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। আর এসব আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলনে যুদ্ধক্ষেত্র পরিচালনা করে আ.লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা থেকে জানা গেছে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলায় অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে শটগান, বন্দুক ও পিস্তল বেশি দেখা গেছে। কোথাও কোথাও রাইফেলও দেখা গেছে।
ফেনীতে সংসদ সদস্য নিজাম হাজারীর অনুসারী, লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা, নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানের অনুসারী, ঢাকার চাঁনখারপুলে নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের অনুসারীরা একে-৪৭ ও এম-১৬ রাইফেল দিয়েও আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি করে। এমন সচিত্র সংবাদ ওই সময় দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠে আসে। সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাতিজা ও ঢাকা উত্তর সিটির ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ ৪ আগস্ট রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় শিক্ষার্থীদের দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে গুলি ছোড়েন। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
জুলাই বিপ্লবে হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার এসব অস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ৬০ শতাংশ অস্ত্র জমা পরেনি। এ অস্ত্র নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুধু তাই নয় দেশের জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখা দেশের প্রতিটি জেলা প্রশাসক ও এসপিদের কাছ থেকে এ বিষয়ে তথ্য চেয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই অস্ত্রগুলো কেন উদ্ধার করা হচ্ছে না? কাদের কাছে এই অস্ত্রগুলো রয়েছে। এবিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে জানাতে হবে।
সরকারি তথ্য ও নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুসারে, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে গত বছরের ৫ আগস্ট হাসিনার পতন ও পলায়নের আগ পর্যন্ত সাড়ে ১৫ বছরে বাংলাদেশে ৮২ হাজারের বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়, যার বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামে ইস্যু করা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিগত আ. লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বেসামরিক নাগরিকদের দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করেছে বর্তমান সরকার। গত ২৫ আগস্ট এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়।
শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনকে দমন করতে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসব অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালানোর কারণে সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয় বলেও জানান সরকারের ওই কর্মকর্তা। পাশাপাশি বেসামরিক লোকদের হাতে থাকা সব অস্ত্র ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ১৩ হাজার ৩৪৯টি আগ্নেয়াস্ত্র জমা পড়ে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘থানায় যেসব অস্ত্র জমা হয়েছে, তার অধিকাংশের লাইসেন্স নেওয়া হয় ২০০৯ সালের আগে। অস্ত্র জমাকারীদের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ছিলেন। সাড়ে ১৫ বছরে দেওয়া লাইসেন্সের মধ্য থেকে খুব সামান্যই জমা হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরে যেসব নেতার নামে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়, সেগুলো জমা পড়েনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ঠিকানায় গিয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলা ও বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র আক্রমণের ঘটনা উল্লেখ করা হয়। এতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সঙ্গে মিলেমিশে কিংবা সমন্বয় করে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাদের অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহারের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন কলেজ, উত্তরা, যাত্রাবাড়ী, রায়েরবাগ, খুলনা, কুমিল্লা ও সাভারের ঘটনা উল্লেখযোগ্য। ওই সব স্থানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ নেতাদের অস্ত্র নিয়ে জাতিসংঘের এই সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্দোলন চলাকালে যেসব ক্ষেত্রে বেসামরিক লোকেরা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেন, সেসব ক্ষেত্রে তাদের হাতে পিস্তল, রিভলভার, সাব-মেশিনগান, দেশীয় অস্ত্র এবং স্পোর্টিং শটগান দেখা যায়। কিছু ঘটনায় বিশেষ করে আগস্টের শুরুর দিকে কিছু ব্যক্তিকে ট্যাকটিক্যাল শটগান ও আধা-স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ব্যবহার করতেও দেখা যায়।
লাইসেন্স প্রক্রিয়ায় অনিয়ম-দুর্নীতি:
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, আওয়ামী লীগ আমলে নেওয়া অধিকাংশ অস্ত্রের লাইসেন্স রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীদের আঁতাত এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখা এসব অস্ত্রের লাইসেন্সের তদারক করে। বিগত সরকারের সময় রাজনৈতিক পরিচয়ে দেওয়া এসব অস্ত্রের লাইসেন্সের পরিপূর্ণ ডাটাবেজ নেই। উপদেষ্টার দপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত ডাটাবেজ তৈরি করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
অস্ত্রের লাইসেন্স ও ডাটা সংরক্ষণের বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসির বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার পর অস্ত্র কেনা, বহন ও ডকুমেন্টশনের যাবতীয় তথ্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংরক্ষিত থাকার কথা। যিনি অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন, তিনি কোন দেশের ও কোন প্রতিষ্ঠানের কী ধরনের অস্ত্র কিনেছেন, তার যাবতীয় বিবরণ দিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পুনরায় ডকুমেন্টেশন করিয়ে নেবেন। এটাই অস্ত্র ব্যবহারের নিয়ম। ফলে প্রত্যেক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসব অস্ত্রের তথ্য থাকা স্বাভাবিক। ঠিকানা ধরে অভিযান চালালে খুব সহজেই এসব অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব।
লুট হওয়া অস্ত্রও চলে যাচ্ছে সন্ত্রাসীদের হাতে:
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, গত বছর গণঅভ্যুত্থানের পর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানা, ফাঁড়ি ও বক্সসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ও স্থাপনা থেকে পাঁচ হাজার ৭৫০টি আগ্নেয়াস্ত্র লুট হয়। ওই সময়ে গোলাবারুদ লুট হয় ছয় লাখ ৫১ হাজার ৬০৯টি। লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে রয়েছে রাইফেল, এসএমজি, এলএমজি, শটগান, পিস্তল, কাঁদানে গ্যাস লঞ্চার, গ্যাসগান, কাঁদানে গ্যাসের শেল, কাঁদানে গ্যাসের স্প্রে, সাউন্ড গ্রেনেড ও বিভিন্ন বোরের গুলি।
এখন পর্যন্ত চার হাজার ৩৭৩টি অস্ত্র উদ্ধার করতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বাকি এক হাজার ৩৭৭টি অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান চলমান বলে জানান পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা। লুট হওয়া সাড়ে ছয় লাখের বেশি গোলাবারুদে মধ্যে এ পর্যন্ত চার লাখের মতো উদ্ধার করতে পেরেছে যৌথবাহিনী। আড়াই লাখের বেশি গোলাবারুদ উদ্ধার হয়নি। উদ্ধার না হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ বিভিন্ন হাত ঘুরে সন্ত্রাসীদের হাতে যেতে পারে বলে আশঙ্কা নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বরে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার দোগাছী এলাকার এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস লেন থেকে শাহিদা আক্তার নামে এক নারীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শাহিদার প্রেমিক তৌহিদ শেখ ওরফে তন্ময়কে গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে একটি পিস্তল জব্দ করা হয়। পিস্তলটি ৫ আগস্ট ডিএমপির ওয়ারী থানা থেকে লুট হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গত মাসে নোয়াখালীর সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী এলাকা থেকে যৌথবাহিনীর অভিযানে ৯টি ম্যাগাজিন এবং পাঁচটি বিদেশি পিস্তলসহ ১৭টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২৭৭ রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার করা হয়। ওই সময় পাঁচ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়াও রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে গোলাগুলির পর কয়েকটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। সেগুলোও পুলিশের লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র বলে আমার দেশকে নিশ্চিত করেন উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা।
দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ:
সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এবং বিশ্লেষক খান সাঈদ হাসান বলেন, লাইসেন্স করা অস্ত্র যাদের দেওয়া হয়েছে, তাদের প্রত্যেকেরই বর্তমান-স্থায়ী ঠিকানা, এনআইডি নম্বর, প্রত্যয়নকারী ইত্যাদি রেকর্ডে আছে। তাদের আবারো নির্দিষ্ট একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে অস্ত্রগুলো লাইসেন্স করা ব্যক্তি অথবা তার প্রতিনিধির মাধ্যমে নিকটস্থ থানায় জমা দেওয়ার জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা যেতে পারে। যারা এটি না মানবে, একটি প্রেসিডেনসিয়াল অর্ডিন্যান্স জারির মাধ্যমে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি সাময়িকভাবে বাজেয়াপ্ত করার কথা ওই নোটিসে লিখে দেওয়া যেতে পারে। তাহলে অনেক অস্ত্র জমা পড়বে বলে আমার বিশ্বাস।
অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক বলেন, আর সময় দিয়ে লাভ হবে না। জননিরাপত্তা বিবেচনায় বরং দ্রুত নোটিস দিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। জমা না পড়া বৈধ অস্ত্রগুলোর অবৈধ ব্যবহারের শঙ্কা রয়েছে।
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সারা দেশে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। আওয়ামী আমলের নিয়োগ করা পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তাদের অসহযোগিতাও রয়েছে। পাশাপাশি আরেকটি আশঙ্কার বিষয় হলো আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের আমলে প্রায় ৮২ হাজার অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয় সম্পূর্ণ দলীয় বিবেচনায়।’
৫ আগস্টের পর সরকারের পক্ষ থেকে সব অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো বলা হয়নি কী পরিমাণ অস্ত্র থানায় জমা পড়েছে আর বাকি অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সরকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী উদ্যোগ নিচ্ছে। যেহেতু জননিরাপত্তা নিয়ে নাগরিকদের মাঝে বেশ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েছে, আমরা সরকারের কাছ থেকে এ বিষয়ে পরিষ্কার পথরেখা এবং বক্তব্য দেখতে চাই।
এই রাজনীতিবিদ আরো বলেন, ‘গত কয়েক মাস থেকে পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের ঝটিকা মিছিল, অনলাইনে নাশকতার হুমকি ও বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রের আলামত বাড়ছে। অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশসহ সরকারকে আরো তৎপর হওয়া জরুরি।’
মামলার সিদ্ধান্তের কথা বললেন আইজিপি:
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম জানান, যারা অস্ত্র জমা দেননি, তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর সময় দেওয়ার সুযোগ নেই। এখন আইনি প্রক্রিয়ায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সূত্র: আমার দেশ
Post Comment