Loading Now

এইচএসসির ফল প্রকাশ হতে পারে অক্টোবরের মাঝামাঝি

 

অনলাইন ডেক্স ।।

চলতি বছর এইচএসসি ও সমমানের কিছু পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আবার কিছু পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোর উত্তরপত্র (খাতা) মূল্যায়ন করে ফল তৈরি হবে। আর বাতিল হওয়া পরীক্ষাগুলোর ফল তৈরি করা হবে পরীক্ষার্থীদের এসএসসি ও জেএসসি বা সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে। এ কারণে ফলাফল নিয়ে দুশ্চিন্তায় সাড়ে ১৪ লাখ পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। কবে নাগাদ ফল প্রকাশ করা হবে, তা জানতেও উদগ্রীব তারা।

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সূত্র বলছে, শিক্ষার্থীরা এবারের ফলাফল নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। তাদের উদ্বেগের মধ্যে রাখতে চায় না কর্তৃপক্ষ। সেজন্য দ্রুত ফল প্রকাশে কাজ করছেন তারা।

 

বোর্ডের কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, আগামী সপ্তাহে ফলাফল প্রকাশের প্রস্তাবনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ফল প্রকাশ সম্ভব হবে। প্রস্তাব অনুমোদনে দেরি হলে ফল প্রকাশ আরও পিছিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

 

জানা গেছে, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল কীভাবে তৈরি করা হবে, তার একটি প্রস্তাবনা সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলোর মোর্চা ‘আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি’। সেখানে বাতিল হওয়া পরীক্ষাগুলোর জন্য এসএসসির ৭৫ শতাংশ নম্বর এবং জেএসসির ২৫ শতাংশ নম্বর সমন্বয় করে গ্রেডিং পদ্ধতিতে ফল তৈরির প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই প্রস্তাবনা এখনো অনুমোদন হয়ে বোর্ডে আসেনি। সেটা হাতে পেলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ শিক্ষার্থীদের জানাতে পারবে।

এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল করে আদেশ জারি
সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে এসএসসি ৭৫ ও জেএসসির ২৫ নম্বর সমন্বয়ের প্রস্তাব
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ সূত্র জানায়, ফলাফল তৈরির প্রক্রিয়া ঠিক করতে যে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়। শিগগির তাতে অনুমোদন দেওয়া হবে। এ সপ্তাহের মাত্র একদিন (বৃহস্পতিবার) বাকি। সেজন্য আগামী সপ্তাহের শুরুতে প্রস্তাবনা অনুমোদন হতে পারে।

জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘প্রস্তাবনা যেটা পাঠিয়েছি, সেটা অনুমোদন হয়ে আজ পর্যন্ত আসেনি। আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বসহকারে কাজ চলছে। শিগগির পেয়ে যাবো হয়তো। এ সপ্তাহে না হলে আগামী সপ্তাহে সেটা অনুমোদন হতে পারে।’

 

যদি আগামী সপ্তাহে প্রস্তাবনা অনুমোদন হয়, সেক্ষেত্রে এইচএসসির ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ বা সময় কখন হতে পারে—এমন প্রশ্নে তপন কুমার সরকার বলেন, ‘আগামী সপ্তাহের মধ্যে এটা চূড়ান্ত হলে আমরা অক্টোবরের ঠিক মাঝামাঝি সময়ে ফল প্রকাশ করতে পারবো বলে আশা করছি। সেক্ষেত্রে অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ পার হবে না হয়তো। শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন। আমরা চাই না তাদের আরও বেশি উদ্বেগের মধ্যে রাখতে। সেজন্য দ্রুত সবকিছু করার চেষ্টা হচ্ছে।’

বিষয়টি নিয়ে জানতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কেউ এ নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে চাননি। একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুধু এটুকু বলতে পারি, এ সপ্তাহে প্রস্তাবনা পাঠানোর সম্ভাবনা কম। সোম বা মঙ্গলবারের দিকে হয়তো বিষয়টি সলভ (সমাধান) হয়ে যাবে। তখন এটা (ফল তৈরির প্রস্তাবনা) সেখানে (আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি) চলে যাবে।’

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা শুরু হলে ১৬ জুলাইয়ের পর এইচএসসির আর কোনো পরীক্ষা হয়নি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা বাকি ছিল, তা বাতিলের দাবি তোলেন পরীক্ষার্থীরা।

টানা এক সপ্তাহের আন্দোলনের পর তারা ২০ আগস্ট সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা একপর্যায়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করে পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানান। তাদের আন্দোলনের মুখে বাকি পরীক্ষাগুলো বাতিল ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার।

সে হিসেবে পরীক্ষা বাতিল ঘোষণার ২০ দিন পরও কীভাবে ফল তৈরি ও কবে প্রকাশ করা হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সরকার। শিক্ষা বোর্ডগুলো যে প্রস্তাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দিয়েছে, সেটাও এখনো অনুমোদন হয়নি।

গত ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। এতে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। প্রথম দফায় প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।

সূচি অনুযায়ী—১৩ দিনের মোট ৬১টি বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া বাকি ছিল। বিভিন্ন বিভাগের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) বিভিন্ন বিষয় থাকায় এতগুলো পরীক্ষা স্থগিত এবং পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তা বাতিল করা হয়।

যদিও প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১৩টি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এরমধ্যে রয়েছে আবশ্যিক বাংলা ও ইংরেজির চারটি বিষয় (প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র) ও আইসিটি। বাকি ৮টি বিষয় ঐচ্ছিক (বিভাগভিত্তিক)।

 

সিলেট বোর্ড ছাড়া বাকি বোর্ডগুলোর আবশ্যিক ছয়টি এবং কেউ কেউ বিভাগভিত্তিক একটি পরীক্ষাসহ ৭টি পরীক্ষা দিয়েছেন। ফলে কারও ছয়টি, কারও সাতটি পরীক্ষা বাতিল হয়েছে, যেগুলো সবই বিভাগভিত্তিক।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED