এসবি প্রধানের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা
অনলাইন ডেক্স ।।
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে এসবিপ্রধানের নির্দেশ বাস্তবায়ন করেন মাঠ পর্যায়ের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। আবদুল হামিদ থাইল্যান্ড যাওয়ার উদ্দেশে ৭ মে রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। এ সময় ইমিগ্রেশনে কর্মরত কর্মকর্তারা অতিরিক্ত আইজিপি (এসবি) এবং ডিআইজিকে (ইমিগ্রেশন) জানান।
তারা আবদুল হামিদকে না আটকানোর নির্দেশ দেন। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হলে রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশত্যাগ করেন। অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মতিউর রহমান শেখের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। ইতোমধ্যে ওই প্রতিবেদন পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দেওয়া হয়েছে। শনিবার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয় বলে পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে এসবিপ্রধান মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে বিষয়ে প্রতিবেদনে কর্মকর্তাদের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এসবি বা অন্যান্য কর্তৃপক্ষের অবস্থান সম্পর্কেও তথ্য রয়েছে ওই প্রতিবেদনে। বলা হয়, গ্রিন সিগন্যাল পেয়েই জুনিয়র কর্মকর্তা বা সদস্যরা আবদুল হামিদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করেন এবং দেশত্যাগের সুযোগ দেন।
আবদুল হামিদের বিদেশ যাত্রার বিষয়টি চাউর হওয়ার পর চাপে পড়ে সরকার ও পুলিশ প্রশাসন। চাপের মুখে দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগে ওইদিন সন্ধ্যায় দুই কর্মকর্তাসহ চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায় পুলিশ সদর দপ্তর। এর মধ্যে দুজনকে প্রত্যাহার করা হয়, আর দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রত্যাহার করা সদস্যরা হলেন ওই রাতে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাহসিনা আরিফ ও কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী। সাময়িক বরখাস্ত করা কর্মকর্তারা হলেন কিশোরগঞ্জ সদর থানায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আজহারুল ইসলাম ও পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) টিএসআই মো. সোলায়মান।
আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় গঠিত পুলিশের তদন্ত কমিটি ১২ মে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও পরে তারা শনিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
অতিরিক্ত আইজিপি মতিউর রহমান শেখের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- এসবির ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান ও ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম। এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদষ্টো সিআর আবরারের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি এখনো তদন্ত করছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন আবদুল হামিদ। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নেন। এরপর ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বার ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নেন। তার মেয়াদ শেষে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন।
Post Comment