কাঁদতে কাঁদতে আইসিসিকে জীবনের দুঃখের গল্প শোনালেন মারুফা
স্পোর্টস ডেক্স ।।
গতির সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেংথে ব্যাটারদের ভড়কে দিচ্ছেন মারুফা আক্তার। ক্যারিয়ারে প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে এসেই কাঁপিয়ে দিচ্ছেন মারুফা। লাসিথ মালিঙ্গা, নাসের হুসেন, মিতালি রাজ—সবার মুখেই এখন মারুফার প্রশংসা। বাংলাদেশের তারকা পেসার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) এক ভিডিও বার্তায় শোনালেন তাঁর এক সময়ের দুঃখের করুণ গল্প।
যে মারুফা এখন প্রতিপক্ষের কাছে আতঙ্কের এক নাম, তাঁর চলার পথটা মসৃণ ছিল না। নীলফামারীর সৈয়দপুরের হতদরিদ্র এক পরিবারে তাঁর জন্ম। ৬ সদস্যের পরিবারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। নিজেদের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে মারুফার বাবা বর্গা চাষ করতেন। আর্থিক অনটন থাকায় একটা সময় ভালো জামাকাপড় পরতে পারতেন না। যার ফলে কোনো অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের এই পেসার দাওয়াত পেতেন না। গুয়াহাটিতে গতকাল বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের আগে আইসিসির এক ডকুমেন্টারিতে মারুফাকে কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে কথা বলতে শোনা গেছে। ২০ বছর বয়সী এই পেসার বলেন,‘‘বিয়ে বা কোনো অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়ার যে সামাজিক রীতি, অনেকে সেটাও করতেন না। তাঁরা বলতেন, ‘তাদের ভালো পোশাক নেই। দাওয়াত দিলে মানসম্মান থাকবে না।’ এ ধরনের কথাবার্তা শুনতে হয়েছে।’
পুরোনো সেদিনের দুঃখের স্মৃতি স্মরণ করতে গিয়ে মারুফা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছেন। আইসিসিতে প্রচারিত ডকুমেন্টারিতে বাংলাদেশের এই পেসার বলেন,
‘আমার বাবা কৃষক। পয়সাকড়িও ছিল না তেমন। আব্বা যখন বাসায় থাকতেন না, তখন মাকে এসে নানারকম কথা বলতেন অনেকে। এমন খারাপ কথা বলা হতো, যেগুলো বলার মতো না। মা তখন কাঁদতেন। আমিও কাঁদতাম এই চিন্তা করে যে এতকিছু হচ্ছে আমার জন্য। এমনকি ঈদেও নতুন জামাকাপড় কিনতে পারিনি।’
২০২২ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের জার্সিতে ২৯ ওয়ানডে ও ৩০ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫৯ ম্যাচে নিয়েছেন ৪৫ উইকেট। এর আগে ২০২৩, ২০২৪ সালে দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছেন তিনি। ভারত-শ্রীলঙ্কায় হাইব্রিড মডেলে চলমান নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে মারুফা কথা বলছেন প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে। ৩ ম্যাচে ৬.১৫ ইকোনমিতে নিয়েছেন ৫ উইকেট। যার মধ্যে গতকাল গুয়াহাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মারুফা খরুচে বোলিং করেছেন। ৭ ওভারে ৫৮ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরেছে ১০০ রানে। সমান ২ পয়েন্ট হলেও নেট রানরেটের কারণে পাঁচ ও ছয়ে নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশের নেট রানরেট -০.২৪৫ ও -০.৩৫৭।
Post Comment