কীর্তনখোলার তীরে পড়ে থাকা সেই শিশুর সফল অস্ত্রপচার
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
বরিশাল নগরের কীর্তণখোলার তীরে গত ২২ মার্চ উদ্ধার হওয়া সেই নবজাতকের মেরুদণ্ডের টিউমার অপসারণে অস্ত্রপচার সফল হয়েছে। বুধবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে শিশুটির অস্ত্রপচার হয়। বর্তমানে সেখানেই বেডে রয়েছে সে।
জানা যায়, টিউমারসহ ভূমিষ্ঠ শিশুটির চিকিৎসা ব্যয়ের ভয়ে জন্মের পরদিনই তার বাবা-মা শিশুটিকে দত্তক দিয়েছিলেন। ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরের ত্রিশ গোডাউন এলাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় শিশুটিকে।
শিশুটির বাবা গণেশ দত্ত শনিবার দুপুরে জানান, অস্ত্রপচারের পর নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে শিশুটিকে শয্যায় দেওয়া হয়েছে। তার খাওয়াসহ সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। পর্যবেক্ষণের জন্য আরও কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের বরিশালের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজের চেষ্টায় চিকিৎসা ব্যয়ে কিছুটা সাহায্য পেয়েছেন। তবে রাজধানীতে থাকাসহ অন্যান্য খরচ মেটাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের বরিশালের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পরভেজ বলেন, গত ২২ মার্চ রাতে পরিচয়হীন অবস্থায় উদ্ধারের পর শিশুটি সমাজসেবা অধিদপ্তরে তত্ত্বাবধানে ছিলো। ৬ দিন পর শিশুটির অভিবাবকের সন্ধান পাওয়া যায়। শিশুটির ব্যয়বহুল চিকিৎসা ব্যয় মেটানো দরিদ্র পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগাসহ সাধ্য অনুযায়ী নানা চেষ্টা করেছি।
শিশুটি বাগেরহাট পৌর শহরের ফুটপথে চা বিক্রেতা গণেশ শ্যাম-অন্তরা দাস দম্পত্তির প্রথম সন্তান। গণেশের বক্তব্য অনুযায়ী, গত ২১ মার্চ বরিশাল নগরের সদর রোড মোখলেসুর রহমান ক্লিনিকে সিজারিয়ান অস্ত্রপচারে শিশুটির জন্ম হয়। জন্মগতভাবেই শিশুটির পিঠের মেরুদণ্ডে টিউমার জাতীয় জটিল কিছু দেখা যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই দিনই নবজাতককে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ব্যয়বহুল চিকিৎসা ও পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ার আশংকায় পরদিন ২২ মার্চ ওয়ার্ডে বসেই শিশুটিকে এক রিকশাচালকের কাছে দত্তক দেওয়া হয়। তারপর শিশুটির সঙ্গে সঠিক কী হয় তা জানা না গেলেও ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরের ত্রিশ গোডাউন এলাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় শিশুটিকে।
Post Comment