হোটেল রুমে প্রবেশ করে পর্যটকদের ভিডিও ধারণ, যুবককে কারাদণ্ড
কুয়াকাটা প্রতিনিধি ।।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় একটি আবাসিক হোটেলে জোর করে ঢুকে পর্যটকদের ভিডিও ধারণের অভিযোগে মো. হালিম নামে এক যুবককে ১৪ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযুক্ত হালিম বরগুনার ফুলবুনিয়া এলাকার মৃত কামাল মৃধার ছেলে।
তিনি ‘কে আর’ নামে কুয়াকাটায় চার কক্ষবিশিষ্ট একটি টিনশেড হোটেল ভাড়ায় নিয়ে পরিচালনা করতেন। তবে অভিযোগকারী হোটেল মালিকের দাবি, পরিকল্পিতভাবে তার হোটেলের সুনাম ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
জানা গেছে, বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমানিক ৪টার দিকে অভিযুক্ত হালিম কৌশলে এক আবাসিক হোটেলে ঢুকে দুটি দম্পতির রুম টার্গেট করেন। তিনি ওই রুম দুটিতে প্রবেশ করে নারী-পুরুষ পর্যটকদের পুলিশের ভয় দেখিয়ে নানা প্রশ্ন করতে থাকেন এবং সেগুলোর ভিডিও তার মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। তারা বিবাহিত কিনা তাও জানতে চান।
হোটেলটির মালিক মো. শাকিল তালুকদার বলেন, রাতে দুটি রুম ভাড়া দিয়ে আমি বিশ্রামে যাই। গভীর রাতে হোটেল স্টাফদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কক্ষে প্রবেশ করে পর্যটকদের বিভিন্ন প্রশ্ন করে ভিডিও ধারণ করেন হালিম। তাদেরকে (পর্যটকদের) জিজ্ঞেস করেন তারা কোথা থেকে এসেছেন, বিবাহিত কি না। ঘটনার সময় চিৎকার-চেঁচামেচির শব্দে আমার ঘুম ভাঙে। এরপর গিয়ে দেখি, পাশের হোটেল কে আর-এর পরিচালক হালিম আমার হোটেলের ঘুমন্ত পর্যটকদের ডেকে হয়রানি করছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি প্রশ্ন করি- অনুমতি না নিয়ে কেন হোটেলে ঢুকে এমন আচরণ করছেন। জবাবে তিনি আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ও গালাগালি করে হোটেল থেকে বেরিয়ে যান। সে সময় তিনি মাদকাসক্ত অবস্থায় ছিলেন বলে আমার ধারণা। পরে ওই দুই রুমের পর্যটক হোটেল ছেড়ে চলে যান।
হোটেল মালিক শাকিল আরও জানান, কিছুদিন আগে হালিমের হোটেলে মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে একজন স্টাফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হালিমের ধারণা, আমি এবং আশপাশের হোটেল মালিকরা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযান চালাতে সহায়তা করেছি। সেই ক্ষোভ থেকেই তিনি এমন কাজ করেছেন এবং এর আগেও আমাকে হুমকি দিয়েছেন।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেস সচিব জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, হোটেল মালিক শাকিল তালুকদার আমাকে বিষয়টি জানানোর পর আমি দ্রুত ট্যুরিস্ট পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করি। কুয়াকাটায় পর্যটকদের সঙ্গে কোনো রকম অশ্লীল আচরণ বা হয়রানি সহ্য করা হবে না। কেউ এমন কাজ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ইয়াসীন সাদেক বলেন, একটি হোটেলের রুমে জোরপূর্বক প্রবেশ করে পর্যটকদের ভিডিও ধারণের অভিযোগ পেয়ে আমরা অভিযুক্ত হালিমের মোবাইল চেক করে সেই ভিডিও পাই। এরপর তাকে আইনের আওতায় আনা হয়। পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা সর্বদা সচেষ্ট। এ ধরনের অপরাধ যেন আর কেউ না করে, সেই বার্তা দিতেই অভিযুক্ত হালিমকে ১৪ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
Post Comment