কোন্দল মিটাতে কি প্রার্থী হবেন জিয়া পরিবারের সদস্যরা?
▶️রাইসুল ইসলাম অভি:
বরিশাল নগরী ও সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত বরিশাল-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন ১১ নেতা। এ সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।তবে অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটাতে সবসময়ই বিএনপির ভোটব্যাংক এই আসনে জিয়া পরিবার থেকে সরাসরি প্রার্থীও হতে পারে বলে বিশস্ত সুত্রে জানা গেছে। দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম জিয়া কিংবা তারেক রহমান অথবা পুত্রবধু জোবাইদা রহমানকেও এ আসনে প্রার্থী করা হতে পারে। এখন পর্যন্ত এ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন-দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক তিনবারের সংসদ সদস্য মজিবর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবায়দুল হক চাঁন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (বর্তমানে পদস্থগিত)বিলকিস জাহান শিরীন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবুল কালাম শাহীন, বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক, সদস্যসচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার, জেষ্ঠ্য যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি জাকির হোসেন নান্নু।ও বিএনপি নেতা আলি হায়দার বাবুল।
এ বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, বরিশাল মহানগর বিএনপির বিভেদ, কোন্দল ও দ্বন্দ্ব এবং গ্রুপিংয়ের বিষয়টি কেন্দ্র অবগত রয়েছে। তবে বরিশালের একটা ঐতিহ্য আছে। নির্বাচনের আগে দ্বন্দ্ব ভুলে সবাই এক হয়ে যায়।এবারও ব্যতিক্রম হবে না।তবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কতটা তাকে পছন্দ করেন সেটা নিয়েও রয়েছে নানা গুন্জন।দীর্ঘ প্রায় ৬/৭ বছর ধরে স্থানীয় রাজনীতিতে কোনঠাসা সরোয়ার,বর্তমানে যারা পদে আছেন তারা কেউ তার কাছে ঘেসেন না এমনকি তাকে কোন কর্মসুচীতে দাওয়াত পর্যন্ত দেয়া হয় না।তবুও সংসদ সদস্য মনোনায়নের ক্ষেত্রে ১ নম্বর ফিটলিষ্টে রয়েছেন সরোয়ার এমনটা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, বিএনপি বড় দল। এখানে অনেক নেতা প্রার্থী হতে চাইবেন। দল যাকে মনোনয়ন দেবে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তার পক্ষে কাজ করবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন,জাতীয় রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও এখন সময় এসেছে ঘরে ফেরার,তাই দলীয় প্রধানকে আমার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। নির্বাচনের জন্য আমাকে যাতে বরিশাল ৫ আসনেই দেয়া হয়।তবে হেভিওয়েট এই প্রার্থীর সাথে নেই কোন স্থানীয় নেতাকর্মী।পাশাপাশি বিগত ফ্যাসিষ্ট আমলে তার ভাই সরাসরি সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার ভুমিকার ফলে স্থানীয় পর্যায়ে কিছুটা বিতর্ক রয়েছে এই নেতার।
বরিশাল মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুকের নাম শোনা যাচ্ছে, ওয়ার্ড পর্যায়ে তিনি কাজও করছেন। দলীয় আন্দোলন সংগ্রামে কয়েকবার জেল খেটেছেন। কিন্তু ৫ আগষ্টের পর অভ্যন্তরীন কোন্দলে জড়িয়ে বিভিন্ন বির্তকেও জড়িয়েছেন এই নেতা।
অন্য দিকে দলীয় স্থগিতাদেশ না উঠলে নির্বাচনে দলের কাছে মনোনয়নের জন্য আবেদনও করতে পারবেন না বিলকিস জাহান শিরিন। বিগত আন্দোলন সংগ্রাম এ বরিশাল বিভাগে কাজ করলেও ১১ আগষ্ট ২০২৪ একটি পুকুর দখল সংক্রান্ত বিষয়ে দলের বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পাশাপাশি সাধারন সদস্য পদও স্থগিত করা হয় সাবেক সংসদ শিরিনের। যদিও বিষয়টি ছিলো তার পারিবারিক বিষয়টি কেন্দ্র অবগত হলেও এখনো স্থগিতাদেশ উঠে নি শিরিনের।
এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন চান জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমতুল্লাহ। দীর্ঘদিন ধরে মাঠে কাজ করায় তার একটা শক্ত বলয় তৈরি হয়েছে। নগরের প্রতিটি ওয়ার্ড ও সদর উপজেলার সবগুলি ইউনিয়ন তার গণসংযোগ করা হয়ে গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার পাশাপাশি সক্রিয় ভুমিকা রাখেন বলে দাবী তার সমর্থকদের।
তবে দলের একটি সুত্র জানায়, বরিশাল বিএনপিতে যে অভ্যন্তরীন কোন্দল তাতে এক নেতা আরেক নেতার মুখ পর্যন্ত দর্শন করেন না।এমনকি দলের কর্মীরা রয়েছে এতে বিপাকে। সম্প্রতি দলের সদস্য ফরম বিতরন করেছেন ৪ টি গ্রুপ ফলে প্রকৃত জাতীয়তাবাদী সৈনিকরা কার কাছ থেকে ফরম পুরন করবেন তা নিয়েও ছিলেন সংশয়ে। এখানে অভ্যন্তরীন কোন্দলের ফলে হয়েছে হামলা – পাল্টা হামলার মত ঘটনা।কিন্তু কোন পক্ষকে নিয়ে কেন্দ্র বসে কোন্দল মিটানোর চেষ্টা করেনি।এজন্য অনেকেই কেন্দ্রীয় বিএনপির ২ সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কে দায়ী করেন। কারন তারা গ্রুপিং না মিটিয়ে উল্টো একটি গ্রুপকে সমর্থন করে বিভিন্ন সময়ে বক্তব্য রাখেন। এহেন পরিস্থিতিতে হয় কোন্দল অবসান নয়তো জিয়া পরিবার থেকে প্রার্থী এমনটি হতে পারে বলে বলে ঐ সুত্রের দাবী।কারন ২০০৭ সালে এখান থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ঐ সময়ে তৎকালীন সংসদ সদস্য এবং সিটি মেয়র সরোয়ারের বিরুদ্ধে একাধিক প্রার্থী দাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট আরও ভিন্ন এখানে বিএনপির কোন চেইন অফ কমান্ড নেই।সবাই নেতা তাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা হলে জিয়া পরিবারের প্রার্থী দেখতে পারে বরিশালের জনগন এমনটাই ধারনা করা হচ্ছে।
তবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিভিন্ন এলাকায় একাধিক গ্রুপিং ও কোন্দলের কারন নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশে এসে কিছু কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন।যার মধ্যে প্রথম বিষয় হচ্ছে অভ্যন্তরীন কোন্দল মিটিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে দলের কার্যক্রম ফিরিয়ে আনা। তিনি বলেন তখন সব ঠিক হয়ে যাবে।
⚠️copyrighted by dokhinerprotibedon 2025
Post Comment