Loading Now

গোলটেবিল বৈঠক: দেশে মবতন্ত্র চলতে থাকায় সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা আছে

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

দেশে গণতন্ত্রের পরিবর্তে এখন মবতন্ত্র চলছে। এতে সমাজে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ফেব্রুয়ারীতে জাতীয় নির্বাচন আদৌ সম্ভব কিনা এ নিয়ে জনগণের মাঝে প্রশ্ন আছে। অন্তবর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বরিশালে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেছেন। শনিবার নগরীর বিডিএস মিলনায়তনে বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক উত্তরন: নাগরিক ভাবনা’। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন সুজনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমম্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এতে অংশগ্রহন করেন।

মুলাদী উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো: সেলিম রেজা বলেন, সংস্কারসহ দেশের চলমান সংকটগুলো ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনের আগে সমাধান হবেনা। আবার নির্বাচন না হলে অন্তবর্তী সরকারের দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা ঠিক হবেনা। তাই তত্ত্ববধায়ক সরকার গঠন করে সুশাসন নিশ্চিত করার পর নির্বাচন হলে দেশের মঙ্গল হবে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, শ্রীলংকায় গণঅভ্যুত্থানের কয়েকমাসের মধ্যে রাষ্ট্র স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। এদেশে এটা সম্ভব হচ্ছে না।

অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক টুনু রাণী কর্মকার বলেন, সাংবিধানিক পদে দলীয় লোক বসানোয় ৫৪ বছরে দেশে সুশাসন নিশ্চিত হয়নি। ওই পদে দলীয় লোকেরা বসলে তারা জনগণের নয়, দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন।

সুজন সদস্য স্বপন কুমার বেপারী বলেন, ঐক্যমত কমিশন আলোচনায় বিশেষ একটি গোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিয়েছে। তারা শুধুমাত্র তাদের স্বার্থের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন।

বেশিরভাগ বক্তা সংসদ সদস্য প্রার্থীদের নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারনের দাবী তুলেন। এ প্রসঙ্গে সহকারী অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, এমপিরা লেখাপড়া না জানায় এর সুযোগ নেন আমলারা। এজন্য দেশ আমলাতন্ত্র মুক্ত হতে পারেনি।

আগৈলঝাড়া উপজেলা সুজন সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, উপদেষ্টাদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে মতভেদ আছে। কিছু উপদেষ্টা নানা কৌশলে নির্বাচন পেছানোর চেষ্ট করছেন, যাতে তারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেন। তফসিল ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক না হলে বুঝে নেবো- এবারও আমার ভোট আমি দিতে পারবো না।

হেমন্ত অধিকারী নামে একজন বলেন, প্রতিটি নির্বাচনের আগে ও পরে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হন। আগামী নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

অন্য বক্তারা বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর সারাদেশে লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে তেমন কোন সফলতা না আসায় এবং পুলিশ অনেকটা নিস্ক্রিয় থাকায় সুষ্ঠু নির্বানের সম্ভবনা নেই। নির্বাচিতরা যাতে নিজ দলের সমালোচনা ও বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন-এমন বিধান করার দাবি জানান বক্তারা।

সুজনের কেন্দ্রীয় সমম্বয়কারী দিলীপ কুমার বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ ও গণভোট নিয়ে নাগরিক সমাজের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। আগের নির্বাচন কমিশনগুলো প্রার্থীদের হলফনামা সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করেনি। করলে অনেক দুর্নীতিবাজের প্রার্থিতা ভোটের আগেই বাতিল হতো। এসব বিষয় নিয়ে সুজন সারাদেশে নাগরিক মতামত গ্রহন করছে। নাগরিক ভাবনাগুলো রাষ্ট্রের গতিপথ নির্ধারতে সহায়ক হবে।

বরিশাল জেলা সুজন সভাপতি গাজী জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মহানগর সভাপতি আব্দুল মোতালেব হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম, জেলা সাধারণ সম্পাদক রনজিত দত্ত, বরিশাল আঞ্চলিক সমম্বয়কারী মেহের আফরোজ মিতা প্রমুখ।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED