জামিন বাবদ বিচারকে টাকা উপহার পাঠিয়ে বিপাকে পিপি, হারালেন সদস্য পদ
পটুয়াখালী প্রতিনিধি ।।
পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (সিনিয়র জেলা জজ) নিলুফার শিরিনকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) তার সদস্য পদ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি। একই সঙ্গে তাকে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর দেওয়া লিখিত অভিযোগে বিচারক নিলুফার শিরিন উল্লেখ করেন, গত ২০ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে তার বাসার গৃহপরিচারিকার মাধ্যমে মামলার নথিপত্রসহ ৫০ হাজার টাকার একটি বান্ডিল পাঠান পিপি রুহুল আমিন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, নারী ও শিশু বিষয়ক একটি মামলায় জামিনের ব্যাপারে বারবার মোবাইল ফোনে সুপারিশ করেছিলেন রুহুল আমিন। এ ছাড়া আলোচিত শহীদ জসিম উদ্দীনের মেয়ের ধর্ষণ মামলায়ও আসামিপক্ষের হয়ে যোগাযোগের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগে বিচারক উল্লেখ করেন, এভাবে ঘুষ পাঠানোতে আমি মানসিকভাবে অত্যন্ত অপমানিত ও তীব্র রাগবোধ করছি। তিনি ঘুষের টাকা দেওয়ার আগে আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে একই বিষয়ে দুটি ম্যাসেজ দেন। আমি তাকে নিরুৎসাহিত করতে কোনো উত্তর দিইনি। আমি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা জজের সরকারি কৌঁসুলিকে বিষয়টি অবহিত করি ও প্যাকেটটি দেখাই। তারাও প্রচণ্ড রাগান্বিত হন এবং আমাকে বিষয়টি ছোট করে না দেখার পরামর্শ দেন। আমি আশা করি, অভিযুক্ত পিপির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আইনজীবী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘একজন পাবলিক প্রসিকিউটর সরকারের পক্ষে না থেকে আসামিপক্ষের হয়ে বিচারককে ঘুষ দেওয়ার ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’
এদিকে, এক জরুরি সভায় বেশির ভাগ আইনজীবীর উপস্থিতিতে তার সদস্য পদ সাময়িকভাবে স্থগিত এবং সাত দিনের মধ্যে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পিপি রুহুল আমিন বলেন, ‘এটা আইনজীবীদের একটি ষড়যন্ত্র। আমি দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে আইন পেশায় কাজ করে যাচ্ছি। এটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ।’
Post Comment