জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শফিকুল মারা গেছেন
অনলাইন ডেক্স ।।
জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শফিকুল (৩৫) মারা গেছেন। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত শফিকুল আব্দুল সামেদ ও রোকেয়া বেগম দম্পতির ছেলে। বর্তমানে পরিবারটি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টঙ্গী পূর্ব এলাকায় বসবাস করছিল। তিনি গাজীপুরের গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধা। তিনি হালুয়াঘাট উপজেলার দর্শারপাড় গ্রামের বাসিন্দা।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট দুপুরে উত্তরা আজমপুরে ডান পায়ের উরুতে গুলিবিদ্ধ হন শফিকুল। তিনি দীর্ঘদিন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সরকার তাকে দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে সকল কাগজপত্র ব্যবস্থা করলে তিনি দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। সম্প্রতি তার জ্বর ও সেই সাথে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গতকাল সোমবার গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শফিকুল ইসলাম মারা যান।
এদিকে, তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্বজন, সহযোদ্ধা ও এলাকাবাসী তাকে একজন সাহসী জুলাই যোদ্ধা হিসেবে স্মরণ করছেন।
হালুয়াঘাট জুলাই শহীদ ও আহত সেলের প্রতিনিধি রিদওয়ান সিদ্দিকী জানান, শহীদ শফিকের জানাজা বুধবার সকাল ১০টায় হালুয়াঘাট উপজেলার দর্শারপাড় মামা পাগলা মাজার মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তাকে হালুয়াঘাটে নিজ এলাকায় দাফন করা হবে।
এদিকে, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আজ হলুয়াঘাটের এক আহত জুলাই যোদ্ধা, শফিকুল ইন্তেকাল করেছেন। তিনি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রায় দেড় বছর ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন।’
নিহত শফিকুলের ছোট বোন জামাই শফিকুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, ‘হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মরদেহ হালুয়াঘাটে নেওয়ার জন্য একটি ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমরা গাজীপুরে শফিকের জানাজা শেষে হালুয়াঘাটের উদ্দেশে রওনা হই। এখন আমরা ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলা অতিক্রম করছি। আগামীকাল জানাজা শেষে তার দাফন করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার তাকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য বলেছিল। তবে, জুলাই যোদ্ধা শফিক বিদেশ যেতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সম্প্রতি গুলির স্থানে ইনফেকশন হয়, যে কারণে জ্বর আসে। পরে সোমবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শফিক মারা যায়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, শফিক নিউমোনিয়া ও গুলির স্থানে ইনফেকশনের কারণে মারা গেছে।’
হালুয়াঘাট থানার ওসি মো. ফেরদৌস আলম বলেন, ‘জুলাই যোদ্ধা শফিক গাজীপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করব।’
হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলিনুর রহমান বলেন, মৃত্যুর খবর পেয়ে মরদেহ হালুয়াঘাটে আনার জন্য ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে উপস্থিত থেকে যথাযথ মর্যাদায় তাকে দাফন করা হবে। একই সাথে নিহতের পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



Post Comment