Loading Now

ডিমের বাজারে আগুন!

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

মাসের শুরুর দিকে ডিমের দাম বেড়েছিল, যা এখনো পূর্বের মতোই রয়েছে। তবে মুরগি, মাছ, চালসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি অনেকটা আগের দামে স্থিতিশীল রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার অন্যদিনের চেয়ে বেশি ভিড় থাকলেও টানা বৃষ্টির কারণে ক্রেতা সমাগম কম। ফলে বৃষ্টির কারণে বাজারে খুব বেশি দামের হেরফের হয়নি। শুক্রবার বরিশালের বিভিন্ন খুচরা বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিম ডজনপ্রতি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে কমেছে ফার্মের মুরগির দাম। ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে গেছে।

বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহের শুরুতে ডিমের দাম আরও কিছুটা বেশি ছিল। তিন দিন আগে দাম ডজনে পাঁচ টাকা কমে বর্তমান দরে এসেছে। তবে এটিও বেশ চড়া দাম বলা যায়। কারণ, এক মাস আগের তুলনায় এখন ডজনে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার বরিশালের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

ডিমের পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে বাজারে সবজির দাম শীত মৌসুমের তুলনায় কিছুটা বেশি। এ কারণে ডিমের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। সে তুলনায় ডিমের উৎপাদন বাড়েনি। এ কারণে ডিমের দাম কিছুটা বাড়তি রয়েছে।

এদিকে ডিমের দাম বেশি থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা দাম কমেছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির। শুক্রবার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি ২৩০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা কমেছে।

নতুন বাজারে বিক্রেতা কামাল হোসেন বলেন, কুরবানির ঈদের আগে বা পরে মুরগির দাম সাধারণত কম থাকে। সেই হিসাবে এবছরও দাম কম। তবে বর্ষায় ডিমের সরবরাহ কিছুটা কম থাকে। যদিও এখনকার এই দামে খামারিদের খুব বেশি লাভ হচ্ছে না। উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় এর চেয়ে কম দামে বিক্রি করলে খামারিরা লোকসান গুনবেন।

বিভিন্ন ধরনের সবজি মোটামুটি স্থিতিশীল দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। শুধু বাড়তি রয়েছে টমেটো ও পেঁপের দাম। প্রতি কেজি পটোল, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ও লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকায়; বরবটি, কাঁকরোল, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। এ ছাড়া টমেটো ৭০–৮০ টাকা ও পেঁপে ৫০–৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সজনে ছাড়া মোটামুটি সব সবজির দামই এক শ টাকার নিচে রয়েছে।

জেলখানা মোড় এলাকার সবজি বিক্রেতা মাসুম হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে সবজির সরবরাহ কিছুটা কমেছে। আবার ক্রেতার সংখ্যাও কম। আজকে অনেক ফুটপাতের দোকান বন্ধ রয়েছে। এই বৃষ্টির মধ্যে পণ্য আনতে অনেক কষ্ট হয়, তাই দামে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।’

তবে নিম্নচাপের কারণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি ছিল বরিশালে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, আগামী এক–দুই দিনও এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে কিছু পণ্যের সরবরাহে সাময়িক ঘাটতি ও দাম বাড়তে পারে বলে জানান বিক্রেতারা।

বাজারে মাছ ও মাংস অনেকটা আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি পাবদা মাছ ৪০০–৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০- ৩৫০ টাকা, পাঙাশ ২০০–২৫০ টাকা, রুই ৩৫০–৪৫০ টাকা, কই ২৫০–৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০-৮০০ টাকা ও খাসির মাংস এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এদিকে বাজারে সরু বা মিনিকেট চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মূলত বোরো ধান থেকে তৈরি নতুন চাল বাজারে আসায় চালের দাম কমেছে। খুচরা পর্যায়ে বেশির ভাগ মিনিকেট চালের কেজি এখন ৭৫ টাকার আশপাশে। এই দাম আগের সপ্তাহের মতোই।

মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৫ টাকা, মাঝারি চালের মধ্যে ব্রি-২৮, ব্রি-২৯ ও পাইজাম ৫৮-৬০ টাকা এবং সরু চালের মধ্যে মিনিকেট মানভেদে ৭০-৮২ টাকায়। মাসখানেক আগে মিনিকেটের দাম ছিল ৮২-৯০ টাকা।
অন্যান্য পণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, আলু ২০–২৫ টাকা, দেশি রসুন ১২০–১৪০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED