তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে আনতে গিয়ে নিজের শরীরে আগুন দিলেন যুবক
গৌরনদী প্রতিনিধি ।।
বরিশালের গৌরনদীতে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বাড়িতে ফিরে না যাওয়ায় শ্বশুরের বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করে ও নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে সবুজ হাওলাদার (৩৫) নামে এক যুবকের আত্মহত্যা চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বার্থী গ্রামের মজিবর কাজীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
অগ্নিদগ্ধ সবুজ হাওলাদার পাশের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের মৃত আয়নাল হাওলাদারের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী মুন্নীর স্বজনরা জানান, ১৩ বছর আগে মুন্নী খানমের সঙ্গে সবুজ হাওলাদারের সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ২টি ছেলেসন্তান রয়েছে। দাম্পত্য কলহের জেরে ৬ বছর আগে মুন্নীকে তালাক দেন সবুজ। এর ৫ মাস পর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী মুন্নীকে মারধর করে ডান হাত ভেঙে দেন। এ সময় প্রতিবেশীরা সবুজকে আটক করে গৌরনদী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছিলেন।
এ ঘটনায় মুন্নী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গৌরনদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে ওই মামলাটি বরিশাল আাদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সবুজ জামিনে বের হয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করলে ওই সংসারেও ২ সন্তানের জন্ম হয়।
এদিকে ২ বছর আগে মুন্নী সৌদি প্রবাসে গিয়ে গত দেড় মাস আগে দেশে ফেরেন। রোববার সকাল সোয়া ১০টার দিকে সবুজ হাওলাদার ও তার (সবুজের) মা শিরিয়া বেগম মুন্নীসহ ২ ছেলেকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তবে মুন্নী রাজি হননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সবুজ প্রথমে নিজের শ্বশুরের বসতঘরে ও পরে নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেন। এ সময় সবুজের মা ও সাবেক শ্বশুর-শাশুড়ির চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে ঘরের ও সবুজের গায়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। সবুজকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সবুজের মা শিরিয়া বেগম বলেন, তালাকপ্রাপ্ত পুত্রবধূ মুন্নী খানম আমার ছেলে সবুজের সঙ্গে আমাদের বাড়িতে আসতে রাজি না হলে সবুজ অভিমান করে। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে মুন্নীর বাবার ঘরে ও নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেয়।
গৌরনদী থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অগ্নিদগ্ধ সবুজ হাওলাদারকে উদ্ধার করে রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। এরপর স্বজনরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দুপুরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Post Comment