দক্ষিণাঞ্চল অচলের ঘোষণা ববি শিক্ষার্থীদের
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
দক্ষিণাঞ্চল অচলের ঘোষণা ববি শিক্ষার্থীদের
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ভিসি ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল করার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১২ মে) একাডেমিক শাটডাউনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে মিছিল করে এ ঘোষণা দেন তারা।
আন্দোলনের ২৮তম দিনে শিক্ষার্থীরা জানান, এই ঘোষণার মাধ্যমে ভিসি’র পদত্যাগের দাবিতে চূড়ান্ত পর্যায়ের আন্দোলন শুরু হয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সুজয় শুভ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “মঙ্গলবার দুপুর ২টার মধ্যে ভিসি পদত্যাগ না করলে আমরা দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেব।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের ডাকা একাডেমিক ও প্রশাসনিক শাটডাউনের ফলে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যত অচলাবস্থা দেখা দেয়। ২৫টি বিভাগের পরীক্ষা চললেও ক্লাস হয়নি। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ সময় কাটিয়েছেন ঘোরাফেরা করে। শিক্ষকরা ইতোমধ্যে সংবাদ সম্মেলন ও বিবৃতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন। কর্মকর্তাদের একটি অংশও আন্দোলনের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ২৫টি বিভাগের বেশিরভাগ ক্লাসরুম ফাঁকা ছিল। কয়েকটি বিভাগে পরীক্ষা চললেও করিডোরে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তেমন চোখে পড়েনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির রিডিং রুম, মেডিকেল সেবা এবং পরিবহন ব্যবস্থা চালু ছিল।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সুজয় শুভ বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো কর্ণপাত করেননি। তাই ভিসি পদত্যাগ না করলে দক্ষিণাঞ্চল অচল করে দেওয়া হবে।’
আরেক শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দাবি পূরণ না হওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দ্রুত দাবি না মানলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, ‘ভিসি’র স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউই স্বস্তিতে নেই। এই ফ্যাসিস্ট মানসিকতার ভিসি থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংসের দিকে যাবে।’
বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান উন্মেষ রায় বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানাচ্ছি। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান থাকবে—যাকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী কেউই চান না, তাকে দ্রুত অপসারণ করে সংকটের সমাধান করুন।’
এ বিষয়ে ভিসি ড. শুচিতা শরমিন ও প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান, ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে মশাল মিছিল ও অবরোধ, ভিসি’র বাসভবনে তালা লাগানো, সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
Post Comment