Loading Now

দপ্তরীর দখলে থাকা ছাত্রাবাস উদ্ধার করলো শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

বরিশাল সিটি কলেজ কম্পাউন্ডে ১৬ বছর ধরে দপ্তরীর দখলে থাকা ছাত্রাবাস উদ্ধার করেছে শিক্ষার্থীরা। তবে উদ্ধারকালে গণমাধ্যম কর্মীদের সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে কলেজের পিছনে থাকা টিনশেডের ঘর থেকে দপ্তরী ও তার পরিবারকে বের করে দেয়া হয়। অভিযোগ পাওয়া গেছে দপ্তরীকে একটি কক্ষে আটকে ঘর থেকে আসাবাবপত্র বের করে কলেজ মাঠে রাখা হয়।

এরপর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে টিনের ঘর উচ্ছেদ করে দখলে নেয়। দুই ঘন্টাব্যাপী এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও গণমাধ্যম কর্মীদের সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এ সময় কলেজের প্রধান গেট তালাবদ্ধ রাখা হয়।

কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, বছরের পর বছর ধরে দপ্তরী হেমায়েত হাওলাদার অবৈধভাবে ওই ঘর দখলে রাখে। এক শ্রমিকলীগ নেতার মদদে এ দখলদারিত্ব করে আসছিল। ওই সময় তাদের পক্ষে ঘর দখলে নেয়া সম্ভব ছিল না।

ঘর দখলেই রাখেনি সেখানে বসে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। তার দুই ছেলেও মাদকসেবী। যা কলেজের পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরূপ ছিল। আর এসব কাজ করে আসছিল এক শ্রমিকলীগ নেতার মদদে।
৫ আগস্টের পর দপ্তর হেমায়েতকে ঘর ছেড়ে দেয়ার জন্য অধ্যক্ষ সময় বেধে দেন। ওই সময়ের মধ্যে সে ঘর না ছাড়ায় তাকে পরপর তিনবার কারন-দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়। কিন্তু তাতেও সামান্যতম কর্ণপাত না করায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে ওই ঘর দখলে নেয়া হয়েছে। এতে করে সেখানে কমপক্ষে একশ শিক্ষার্থীর আবাসন সমস্যা নিরসন সম্ভব হবে। এরই সাথে মাদকমুক্ত হবে সিটি কলেজ ক্যাম্পাস।

আটকে রাখার কারন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘর উচ্ছেদে গেলে দপ্তরী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলে। এতে করে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হওয়ায় তাদের হাত থেকে রক্ষায় তাকে একটি কক্ষে রাখা হয়। পুলিশ খবর দেয়া হয়েছে। তাদের কাছে দপ্তরীকে হস্তান্তর করা হবে।

রাতুল খানসহ একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, বছরের পর বছর ধরে তাদের ছাত্রাবাস দখলে রাখায় তারা আবাসন সংকটে ভুগছে। বিশেষ করে যারা বরিশালের বাইরে থেকে পড়াশুনা করতে ?আসে তাদের জন্য বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ কারনে অধ্যক্ষ একাধিকবার দপ্তরীকে বাইরে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে কোন ধরনের কর্ণপাত করেননি হেমায়েত। এরপর শোকজ করা হয়। তাতেও দপ্তরীর কোন ভ্রুক্ষেপ ছিল না। এরপর শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে ঘর দখলে নেয়। এ সময় দপ্তরী তাদের উপর আক্রমন চালালে শিক্ষকরা তাকে ধরে একটি কক্ষে রেখে দেয়। যাতে করে তার উপর কেউ হামলা চালাতে না পারে।

অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের আবাসনের জায়গা দখল করে রাখে দপ্তরী হেমায়েত। শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা নিরসনে দপ্তরীকে মৌখিক এবং লিখিতভাবে ঘর ছাড়তে বলা হয়। কিন্তু তিনি কোনভাবেই ঘর ছাড়ছিল না। পরবর্তীতে একাধিকবার তাকে শোকজ করা হলেও দাপটের সহিত সেখানে অবস্থান করছিল। আজ শিক্ষার্থীরা দপ্তরীর দখলে থাকা ঘর উদ্ধার করেছে।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED