পরিবেশ সুরক্ষায় জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রচারাভিযান
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আজ ৪ জুন বুধবার সকাল ১০ টায় বরিশাল অশ্মিনিকুমার টাউন হলের সামনে প্রান্তজন ট্রাস্ট, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন) এবং বাংলাদেশ পরিবেশ ও উন্নয়ন কর্মজোট (বিডাব্লিউজিইডি) এর যৌথ আয়োজনে একটি ব্যতিক্রমধর্মী প্রচারাভিযান অনুষ্ঠিত হয়েছে। যার মূল লক্ষ্য হলো দেশব্যাপী এগ্রোভোল্টাইক্স বা ‘বিজলি কৃষি’ সম্পর্কে সাধারণ মানুষ এবং কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এই প্রযুক্তির সম্প্রসারণে সরকারের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা।
ভিন্নধর্মী এই প্রচারাভিযানে আগত জলবায়ু কর্মীরা বিশেষ পোস্টার, সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন, মাঠ পর্যায়ে কর্মসূচি এবং ভিডিও বার্তার মাধ্যমে জনগণের মাঝে এগ্রোভোল্টাইক্স-এর সম্ভাবনা ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।
প্রান্তজন এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ তৌহিদুল ইসলাম শাহাজাদা এগ্রোভোল্টাইক্সের প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা করে বলেন, “বাংলাদেশের মতো জনবহুল ও কৃষিনির্ভও দেশে জমির পরিমাণ সীমিত। অপরদিকে, নবায়নযোগ্য জ্বালানির চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। এগ্রোভোল্টাইক্স একটি নতুন ও টেকসই কৃষি-বিদ্যুৎ সমন্বিত প্রযুক্তি, যা একই জমিতে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি কৃষিকাজের সুযোগ সৃষ্টি করে। এতে কৃষকের জমির অপচয় না ঘটিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন সম্ভব হয়।”
পরিবেশ ও উন্নয়ন ফোরামের সদস্য শুভংকর চক্রবর্তী বলেন “বর্তমান জ্বালানি সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কৃষিজমির সুরক্ষার প্রেক্ষাপটে এটি হতে পারে বাংলাদেশের জন্য একটি কার্যকর সমাধান।” দেশব্যাপী প্রচারণা কর্মসূচির মাধ্যমে সংগঠনগুলি জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি এবং সরকারের কাছে এই প্রযুক্তির বিস্তারে নীতিগত সহায়তার আহ্বান জানায়।
এছাড়াও আয়োজক সংগঠনগুলি সরকারের প্রতি নিম্নোক্ত দাবিগুলো উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো
১। এগ্রোভোল্টাইক্স প্রযুক্তি বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন
২। পরীক্ষামূলকভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে মডেল প্রকল্প বাস্তবায়ন
৩। কৃষক ও স্থানীয় উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান
এসময় জলবায়ু কর্মীরা দাবি করেন বিশ্বের পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখতে এগ্রোভোল্টাইক্স একটি উদ্ভাবনী পদ্ধতি, যার মাধ্যমে একই জমিতে কৃষিকাজ ও সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন একসঙ্গে করা সম্ভব। ফলে জমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত হয়, কৃষকের আয় বৃদ্ধি পায় এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির জোগানও বাড়ে। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এবং খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এগ্রোভোল্টাইক্স হতে পারে বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী সমাধান।
প্রচারাভিযানে উপস্থিত ছিলেন ক্যাব বরিশালের সম্পাদক রনজিত দত্ত, বরিশাল পরিবেশ ও উন্নয়ন ফোরামের সদস্য সচিব জনাব এ্যাডভোকেট সুভাষ দত্ত, সদস্য আকতারুল কবির পৃমুখ।
Post Comment