পশুর সাথে এ কেমন নিষ্ঠুরতা !
ঝালকাঠী প্রতিবেদক ॥
ঝালকাঠি সদর উপজেলার কেওড়া ইউনিয়নের তারুলী গ্রামের এক ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর মাছ ও সবজির খামারে গরু প্রবেশ করায় বিষাক্ত ভিক্সল স্প্রে করে ঝলসে দিয়েছে ব্যবসায়ী জাফর আহমেদের কর্মচারীরা। জাফর আহমেদ ঢাকার বনশ্রী এলাকায় বসবাস করেন। পূর্ব তারুলী গ্রামে সু-উচ্চ প্রাচীরঘেরা বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ির খামারে সম্প্রতি গরু ঢোকার অপরাধে ৫টি গরুর শরীরে বিষাক্ত দ্রব্য স্প্রে করলে গরুর চামড়া খসে পড়তে থাকে। বুধবার ২৮ বিকালে ঘটনাস্থলে গেলে এলাকাবাসী জানান, নিরীহ পশুর সাথে চরম অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। সভ্য জগতে এ ধরনের নিষ্ঠুরতা কল্পনাও করা যায় না। গরুগুলোর শরীর থেকে চামড়া খসে পড়ার জ্বালায় ছটফট করতে দেখা যায়। যা দেখলে কোন হৃদয়বান মানুষ স্থির থাকতে পারে না।
এ বিষয়ে গরুর মালিক ভুক্তভোগী আব্দুল হালিম ও মাইনুল ইসলাম বলেন, আমরা গরীব মানুষ, কথা বলতে ভয় লাগে। আমরা কিছু বললে তারা টাকা পয়সার জোর খাটিয়ে আমাদের আরো ক্ষতি করবে এবং এলাকায় বসবাস করতে পারবো না। আল্লাহ ছাড়া বিচার চাওয়ার মত জায়গা আমাদের নেই। জাফর আহমেদের ঘেরের কর্মচারী এতোয়ার হোসেন ও রিমন গরুর শরীরে বিষাক্ত ভিক্সল স্প্রে করে শরীর জ্বলসে দিয়েছে।”
অভিযুক্ত রিমন ও এতোয়ার হোসেন বলেন, গরু ছেড়ে দিয়ে ঘাস খাওয়াতে নিষেধ করার পরও আমাদের ঘেরে প্রবেশ করে ফসলের ক্ষতি করেছে। সেজন্য আমরা বিষাক্ত ভিক্সল গরুর গায়ে স্প্রে করেছি। তবে এ কাজটি করা আমাদের অন্যায় হয়েছে।
খামারের মালিক জাফর আহমেদ এর বাড়ির কেয়ারটেকার আসাদুজ্জামান বাবু বলেন, বার বার নিষেধ করার পরেও গরু প্রবেশ করায় গরুর শরীরে বিষাক্ত ভিক্সল স্প্রে করা হয়েছে। ফলে গরুর চামড়া খসে পড়ছে। ঘেরের মালিক জাফর আহমেদ এর সাথে কথা বলার জন্য মুঠোফোন নম্বর চাইলে তা অস্বীকৃতি জানান বাবু। তিনি বলেন স্যার অপরিচিত কারো সঙ্গে কথা বলেন না। তিনি সাংবাদিকদের এ ঘটনার বিষয়ে সংবাদ প্রচার করতে নিষেধ করেন।
ওই এলাকার ইউপি সদস্য জাহানারা বেগম বলেন, এটি অত্যন্ত ঘৃনিত কাজ হয়েছে। কোন প্রাণীর উপর এরকম অমানবিকতা কখনও গ্রহনযোগ্য না। যারা এ কাজ করেছে তারা খুব বড় ধরনের অপরাধ করেছে। আমি এ কাজের নিন্দা জানাই।
কেওড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হেমায়েত উদ্দিন হিমু বলেন, এ ধরনের অপকর্ম পশু প্রাণীর সাথে যারা করেছে তাদেরকে কোন রকম ছাড় দেয়া উচিত হবে না। সাংবাদিকদের কলমের লেখনী দ্বারা ভুক্তভোগী যেন সঠিক বিচার পায়, সে অনুরোধ জানাচ্ছি।
এবিষয়ে ঝালকাঠি সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Post Comment