Loading Now

প্রতারক শাওন জেলে কিন্তু তার সাঙ্গপাঙ্গরা কি রয়ে যাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে!

মেহেদী হাসান শাওন।বিজিবির( বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ)বহিস্কৃত একজন সহকারী বোট ড্রাইভার। কিন্তু ২০২৪ এর জুলাই বিপ্লবের পর বরিশালে খুটি গেড়ে বসে এই প্রতারক। তবে তার নেটওয়ার্ক ছিল খুব বড়।বরিশালে মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর একটি দলের সাথে মিশে নগরী দাপিয়ে বেড়াতেন।নিজেকে পরিচয় দিতেন ক্যাম্প কমান্ডারের স্পেশাল ইন্টেলিজেন্স স্টাফ। নগরীতে কোন স্থানে ঝামেলা হলেই সেখানে দেখা মিলত এই প্রতারক শাওনের। সেনা কর্তার স্টাফ এই পরিচয়ে পুলিশ, ডিবি ও এনএসআইয়ের সাথেও গড়ে তোলেন সখ্যতা।তার সাথে যোগ দেয় ৪/৫ জন ছাত্র সমন্বয়ক ও নগরীর গুটিকয়েক সাংবাদিক।
মেহেদী শাওন গ্রুপটির কাজই ছিল আওয়ামী নেতা,ব্যবসায়ী,দোকানী,চাকুরীজীবিদের ডেভিল হান্টে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে আর্থিক সুবিধা নেয়া।যা আদায় হতো তা আবার ঐ সমন্বয়কদের নিয়ে ভাগাভাগি করে খেত।সোর্স তাই তার ফোন সবসময়ই রিসিভ করতো সেনা কর্তারা।ঝামেলা শুনে সেনা ট্রুপসও মুভ করতো তার কথায়। বাস এটাই হতো তার ইনকামের পন্থা। মাঝে মাঝে তার গ্রুপের সদস্য এক নারী সমন্বয়ক বিভিন্ন স্থানে ফোন দিয়ে তাকে মেহেদীকে পাঠাতেন অর্থ আদায়ে। নগরীর পুলিশের চারটি থানা এবং পুলিশ কমিশনার অফিস ও এসপি অফিসে বেশ যাতায়াত ছিল মেহেদীর।নগরীর একজন ওসি অকপটে এ প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন,আমরা ওকে (মেহেদী) সেনাবাহিনীর এখানকার ক্যাম্প কমান্ডারের লোক হিসেবে জানতাম কিন্তু ও যে কোন বাহিনীর সদস্য না তা বুঝতে পারি নাই।মেহেদী আটকের পর এত ফোনকল পেয়েছি যা ৬-৭ মাসে কোন আসামি আটকের পর পাইনি।
মেহেদীর হাতে থাকতো একটি ওয়াকিটকি, এটাই ছিল মুলত তার প্রতারণার মাধ্যম। ইমরান আলী নামে এক ব্যক্তি জানান,মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দেয়ার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা আদায় করেছে। এক ব্যাবসায়ী বলেন,আমার প্রতিষ্ঠানে একবার ঝামেলা হয় সেখানে তিনি (মেহেদী) এসে নিজেকে সেনাবাহিনীর তরফ থেকে এসেছে বলে সব সমস্যা সমাধান করে দেবে এ কথা বলে এবং ২০ হাজার টাকা নেয়। মুলত মেহেদী তার প্রতারণার ফাঁদটি ৩ টি স্থরে সাজিয়ে নিতেন।এই ৪ ফুট ৯ ইন্চির যুবকের কতায় মুভ করতো প্রশাসন,আর অনেক জায়গায় যেত সেনাবাহিনীর সদস্যরাও।এজন্য তার পার্টি ডিল করতে ব্যাপক সুবিধা হতো।সাথে আবার নিয়ে নিতেন কিছু ছাত্র সমন্বয়কদের।সবকিছু মিলিয়ে দিনগুলো ভালোই চলছিল শাওনের। কিন্তু বরিশালের ঐ সেনা কর্তার বদলী হলে নতুন সেনা অফিসার এসে শাওনকে কোন কাজে তো লাগাতোই না বরং তার ক্যাম্পে প্রবেশের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পরে অনেকদিন দেখা যায় নি এই প্রশাসন নিয়ে খেলা প্রতারক শাওনকে।কিন্তু স্বাস্থ্যখাত আন্দোলন শুরু হলে শেবাচিম হাসপাতালে যেদিন ছাত্ররা ঘেরাও দিতে যায় সেদিন থেকে আবারও আর্ভিবাব ঘটে এই প্রতারকের।সবশেষ জেলখানায় আটক সুহানের সাথে দেখা করতে গিয়ে পরিচয় দেয় সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের সদস্য হিসেবে।কিন্তু বিধি বাম ধরা পড়ে যায় এই প্রতারক।
এখন প্রতারনা মামলায় রয়েছে কারাগারে।
তবে সচেতন মহলের দাবী, কারা এই প্রতারককে ব্যবহার করলো আর কারা তার কাছ থেকে সুবিধা নিলো তারা কি থেকে যাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে?

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED