বংশগত চোখের রোগে আক্রান্ত দুই সন্তানকে খুন করে আত্মঘাতী মা
অনলাইন ডেক্স ।।
দুই সন্তানকে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছেন এক মা। ছয় পৃষ্ঠার এক সুইসাইড নোটে এ জোড়া হত্যাকাণ্ড ও আত্মহত্যার সিদ্ধান্তের কারণ লিখে গেছেন ওই নারী।
সম্প্রতি এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের তেলেঙ্গানার রাজধানীর জিদিমেতলা থানার আওতাধীন গাজুলারারাম এলাকায়।
জিদিমেতলা থানা পুলিশের বরাতে সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, নিজের প্রাণ কেড়ে নেওয়া ওই নারীর নাম তেজস্বিনী।
নারকেল কাটার যন্ত্র কুড়াল দিয়ে নিজের দুই ছেলে অর্শিত রেড্ডি এবং আশীষ রেড্ডিকে হত্যা করেন তিনি এবং তারপর নিজের অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের পঞ্চমতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন।
সুইসাইড নোট থেকে জানা গেছে, চোখের রোগ ছেলেদের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ায় এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন তেজস্বিনী।
পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন তেজস্বিনী। বংশগতভাবে রোগটি তার দুই সন্তানের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, এই রোগের কারণে প্রতি চার ঘণ্টা পর পর চোখের ড্রপ ব্যবহার করতে হত তেজস্বিনী ও তার দুই সন্তানকে। ড্রপ ব্যবহার না করলে তাদের দৃষ্টিশক্তি কমে যেত। এই ক্রমাগত লড়াই তেজস্বিনীকে অসহনীয় করে তোলে, যার ফলে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েন।
এই রোগের কারণে বাড়িতে নিয়মিত ঝগড়া লেগেই থাকত। তেজস্বিনী তার সুইসাইড নোটে উল্লেখ করেছেন, তার স্বামী প্রায়শই গালমন্দ করতেন। মাঝেমধ্যে ক্ষোভের সুরে ‘যদি চাও মরে যাও’ বলতেন। এক পর্যায়ে এসব ঝগড়া-উত্তপ্ত বাক্যের চাপ সহ্য করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে তেজস্বিনীর জন্য। সুইসাইড নোটে তেজস্বিনী তার সেই যন্ত্রণা এবং হতাশার কথাই লিখেছেন। এই চাপ থেকে রেহাই পেতে দুই ছেলেকে হত্যা করে আত্মহত্যা করেন তেজস্বিনী।
পুলিশ আরও জানায়, ভবন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তেজস্বিনী মারা যান। এর আগে তার ছেলে অর্শিতও কুড়ালের আঘাতে তাৎক্ষণিক মারা যায়। তবে ছোট ছেলে আশীষ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
Post Comment