বদনজর কি সত্য—যা বলেছেন নবীজি (সা.)
অনলাইন ডেক্স ।।
কুদৃষ্টি, খারাপ দৃষ্টি, অশুভ দৃষ্টিকে বলা হয় বদনজর। অবিশ্বাস্য হলেও—মানুষকে উঁচু স্থান থেকে নিচু স্থানে নামিয়ে দেয় বদনজর। রাসুল (সা.) বলেন, ‘বদনজর সত্য। এটি এমন এক প্রভাব—যা মানুষকে উঁচু স্থান থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়।’ (মুসনাদে আহমাদ: ২৪৭৩)
বদনজর বিষয়ে সাহাবি আবু সাহাল ইবনে হুনাইফ (রা.)-এর একটি ঘটনা রয়েছে। তিনি একবার গোসল করার জন্য শরীরের জামা খুলে ফেললে তাঁর সুঠাম দেহ দেখতে পান আমের ইবনে রবিআ (রা.)।
আবু সাহালের শরীর দেখে আমের (রা.)-এর মুখ ফসকে বেরিয়ে আসে, ‘আমি আজ পর্যন্ত এমন সুন্দর দেহ কারও দেখিনি।’ অতঃপর সাহাল ইবনে হুনাইফের ভীষণ জ্বর হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ সংবাদ পেয়ে আমের ইবনে রবিআ (রা.)-কে নির্দেশ দেন—তিনি যেন অজু করে সেই পানি থেকে কিছু অংশ পাত্রে রাখেন। পরে তা যেন সাহাল ইবনে হুনাইফের দেহে ঢেলে দেওয়া হয়।
নির্দেশ পেয়ে সেই মোতাবেক কাজ করলে সাহাল ইবনে হুনাইফ (রা.) অসুস্থতা থেকে রক্ষা পান। অতঃপর রাসুল (সা.) আমের ইবনে রবিআকে সতর্ক করে বলেন, ‘তোমাদের কেউ নিজের ভাইকে কেন হত্যা করতে চায়! যখন তোমার দৃষ্টি তার দেহ সুন্দর দেখেছিল, তখন তুমি তার জন্য বরকতের দোয়া করলে না কেন? মনে রেখো, বদনজর লেগে যাওয়া সত্য।’ (মুআত্তা মালেক)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কাফেররা যখন উপদেশ বাণী শোনে—তখন তারা যেন তাদের দৃষ্টি দিয়ে তোমাকে আছড়ে ফেলবে, আর তারা বলে, সে তো এক পাগল।’ (সুরা কলম: ৫১)
আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরে ইবনে কাসিরে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তাদের দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছড়ে ফেলবে—এর অর্থ, তারা তোমাকে বদনজর দেবে। অর্থাৎ তারা তোমাকে হিংসার প্রতিফলন ঘটিয়ে রোগী বানিয়ে দেবে, যদি আল্লাহ তোমাকে রক্ষা না করেন।
এই আয়াতটি প্রমাণ করে, বদনজরের কুপ্রভাবের বাস্তবতা রয়েছে।
বদনজর ভালো জিনিসের প্রতি লাগলে ক্ষতি হয়। এ জন্য কারও সৌন্দর্য, সম্পত্তি বা কোনো প্রকার উন্নতি দেখলে তার জন্য উন্নতি ও মঙ্গলের দোয়া করা প্রয়োজন। বলা উচিত, বারাকাল্লাহু ফিহি। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা এতে বরকত দান করুন। অথবা বলা যেতে পারে, মাশা আল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
বদনজর থেকে বাঁচার ৩ আমলবদনজর থেকে বাঁচার ৩ আমল
আর কারও বদনজর থেকে রক্ষা পেতে কিংবা আক্রান্ত ব্যক্তি আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস এবং নিয়মিত আমল করা যেতে পারে। এতে সুফল পাওয়া যাবে ইনশা আল্লাহ।
কখনো শিশুরাও বদনজরে আক্রান্ত হতে পারে। বদনজর থেকে রক্ষা পেতে রাসুলুল্লাহ (সা.) ছোটদের কোলে নিয়ে বিভিন্ন দোয়া পড়ে ফুঁ দিতেন বলে উল্লেখ আছে।
কালো জাদু থেকে বাঁচার ৩ আমলকালো জাদু থেকে বাঁচার ৩ আমল
নবী করিম (সা.) হজরত হাসান ও হুসাইন (রা.)-কে নিম্নের দোয়াটি পাঠ করে ফুঁ দিতেন। দোয়াটি হলো—‘উইজুকুমা বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিন ওয়া হাম্মাতিন ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাতিন।’ অর্থ: ‘আমি তোমাদের উভয়কে আল্লাহর কালামের আশ্রয়ে রাখতে চাই, সব ধরনের শয়তান থেকে, কষ্টদায়ক বস্তু থেকে এবং সব ধরনের বদনজর হতে।’ (সহিহ্ বুখারি)
সূত্র: আজকের পএিকা,,,,,,
Post Comment