বরিশালে অর্থনৈতিক শুমারির কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে সারা দেশের মতো বরিশাল জেলায় শুরু হতে যাচ্ছে চতুর্থ ‘অর্থনৈতিক শুমারি’ কার্যক্রম। এ উপলক্ষে শুমারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। রবিবার সকালে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে প্রশিক্ষণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।
এসময় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-বরিশাল বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মোঃ শহীদুল ইসলাম, উপপরিচালক মোঃ আতিকুর রহমানসহ শুমারি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ‘অর্থনৈতিক শুমারিতে তথ্য দিন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশ নিন’ প্রতিপাদ্যকে নিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। চলবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, অর্থনীতিতে কাঠামোগত পরিবর্তন নির্ধারণ করতে চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি কার্যক্রম ডিসেম্বরে শুরু হবে। এ কার্যক্রমে সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক শুমারির মূল লক্ষ্য হলো সময়ের বিবর্তনে একটি দেশের অর্থনীতিতে যে কাঠামোগত পরিবর্তন ঘটে, সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা। সে সাথে অকৃষিমূলক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের কাঠামো নির্ধারণ করা।
জেলা প্রশাসক বলেন, উন্নত বাংলাদেশের প্রেক্ষিত ও পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, ব-দ্বীপ পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট (এসডিজি) প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইকোনোমিক ইউনিটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং বিদ্যমান সমস্যা নিরূপণ করে সমাধানের মহাপরিকল্পনা গ্রহণে এ শুমারির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই তথ্য সংগ্রহের কাজে লিস্টাররা গেলে তাদের তথ্য দিয়ে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান বরিশাল জেলা পরিসংখ্যান দপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আতিকুর রহমান।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ অনুসরণে পল্লী ও শহর এলাকার শিল্প এবং সেবা খাতে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত প্রস্তুত এবং শ্রেণিবিন্যাস করা। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত সকল প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মৌলিক তথ্য সরবরাহ ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত জনবলের হিসাব নিরুপণের পাশাপাশি তাদের ধরণ সম্পর্কে ধারণা লাভ করা সরকারের উদ্দেশ্য। এছাড়াও শিল্প বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান মৌলিক সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা। বিনিয়োগকৃত মূলধন ও জনবল কাঠামো অনুযায়ী শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিবিন্যাসকরণ এবং তাদের সংখ্যা নির্ধারণ। শিল্পোন্নয়নের জন্য দেশের নীতিনির্ধারক, পরিকল্পনাবিদ, গবেষকসহ বিভিন্ন অংশীজনের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করা করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য।
সভায় যুগ্ম পরিচালক মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, দেশের প্রথম অর্থনৈতিক শুমারি পরিচালিত হয় ১৯৮৬ সালে। এরপর দ্বিতীয় শুমারি হয় ২০০১ ও ২০০৩ সালে এবং তৃতীয়টি ২০১৩ সালে। ১০ বছর পর হচ্ছে চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি। তবে এবারই প্রথম ট্যাবলেট পিসির মাধ্যমে (আইসিএমএস) পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। লিস্টিং কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের মোট ইকোনোমিক ইউনিটের সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে এবং পরবর্তীতে সেসব ইউনিটে কাজের ধরণ নির্ধারণ শেষে ধাপে ধাপে বিজনেস রেজিস্ট্রারসহ একাধিক প্রতিবেদন বিবিএস প্রকাশ করবে। সভায় আরও জানানো হয় সকলের ব্যক্তিগত তথ্য গোপন ও নিরাপদ রাখতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আইনগতভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এছাড়াও অর্থনৈতিক শুমারির তথ্য প্রদানের সাথে ভ্যাট-ট্যাক্সের কোন সম্পর্ক নেই।
Post Comment