নদীর তীরে ফেলে যাওয়া নবজাতকের বাবা-মায়ের সন্ধান মিলেছে
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
বরিশাল নগরীর কীর্তনখোলা নদীর তীর থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতকের পরিচয় মিলেছে। সন্ধান পাওয়া গেছে শিশুটির জন্মদাতা বাবা-মায়ের। শিশুটির বাবার নাম গণেশ শ্যাম ও মায়ের নাম অন্তরা দাস। তাদের দাবি, দত্তক দেওয়ার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বসে এক রিকশাচালককে শিশুটি দত্তক দিয়েছিলেন তারা। এরপর তাদের আর কিছু জানা নেই। বাগেরহাট শহরে তাদের স্থায়ী নিবাস এবং শহরের ফুটপাতে চা বিক্রি করেন গণেশ। সন্তানের বর্তমান খবর জানার পর গণেশ ও তার শ্বাশুড়ি সুমি দাস শুক্রবার বরিশাল নগরীতে যান এবং বেলা ১১টায় বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। নবজাতক সমাজসেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। শিশুটি এ দম্পতির প্রথম সন্তান। চার বছর আগে তাদের বিয়ে হয়।
গণেশের ভাষ্য গত ২১ মার্চ বরিশাল নগরীর সদর রোডে অবস্থিত মোখলেছুর রহমান ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। জন্মগতভাবেই পিঠের মেরুদন্ডে টিউমার জাতীয় জটিল কিছু দেখা যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই দিনই নবজাতককে শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে নবজাতকটি চিকিৎসাধীন ছিল। ব্যয়বহুল চিকিৎসা ও পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ার আশঙ্কায় পরদিন ২২ মার্চ ওয়ার্ডে বসেই শিশুটিকে এক রিকশাচালকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে গণেশ ও তার শাশুড়ি সুমি দাস ক্লিনিকে অন্তরার কাছে চলে আসেন। সেখান থেকে তারা স্ত্রী অন্তরাকে নিয়ে বাগেরহাটে চলে যান।
গণেশের দাবি, বরিশাল নগরীর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তার আত্মীয় চাকরি করেন। তিনি কম টাকায় সিজার করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলে বাগেরহাট থেকে বরিশালে যান। শিশুটি জন্মের পর পিঠে টিউমারের বিষয়ে চিকিৎসক বলেছেন, এটি জটিল রোগ, অনেক টাকা ব্যয় করলেও সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম। এতে তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। শিশুটিকে নিয়ে রিকশায় শেবাচিম হাসপাতালে যাওয়ার পথে তারা কান্নাকাটি করছিলেন। এ সময় রিকশাচালক সহানুভূতি দেখিয়ে এক ধনী পরিবারে দত্তক দেওয়ার আশ্বাস দেয়। পরদিন এক নারীসহ হাসপাতালের ওয়ার্ডে গিয়ে রিকশাচালক শিশুটি নিয়ে যায়। হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি ক্লোজ না করেই গণেশ হাসপাতাল ছেড়ে যান।
Post Comment