বরিশালে পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে পারেননি ৪০০ শিক্ষার্থী
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে পারেননি বরিশাল নার্সিং কলেজের আন্দোলনরত পোস্ট বেসিক বিএসসি নার্সিং শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের অসহযোগিতার কারণে রোববার শেষ দিনেও চতুর্থ বর্ষের ফরম পূরণ করতে পারেননি তারা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের শাটডাউন কর্মসূচিতে হামলাকারী তিন শিক্ষককে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত এবং প্রবেশ করতে না দেওয়ায় ৪০০ শিক্ষার্থীকে ফরম পূরণ করতে দেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। তারা ৪০০ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছেন।
রোববার (১৮ মে) এর প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান ও বিচার চেয়ে করেছেন সংবাদ সম্মেলন।
রোববার দুপুরে ক্যাম্পাস চত্বরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল নার্সিং কলেজ শিক্ষার্থীরা বলেন, মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয়ভাবে গত ১৬ মে নার্সিং কলেজে চলমান শাটডাউন কর্মসূচি সাময়িকভাবে শিথিল করা হয়।
মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, বরিশাল নার্সিং কলেজে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ইন্সট্রাক্টর আলী আজগর, ফরিদা বেগম ও সাইফ হোসেন রনি মোল্লার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবে। শিক্ষার্থীরা বলেন, কর্মসূচি শিথিলসহ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার বিষয়টি আমরা কলেজ অধ্যক্ষকে ১৬ ও ১৭ মে জানিয়েছি। পাশাপাশি একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু রাখার অনুরোধ জানিয়েছি।
তবে আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা তিন শিক্ষক আলী আজগর, ফরিদা বেগম ও সাইফ হোসেন রনি মোল্লাকে কলেজে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। আমাদের কলেজে ৩২ জন শিক্ষক। তাদের মধ্যে তিনজন বাদ দিয়ে বাকি ২৯ জনকে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বলেছি।
এতে তারা রাজি হননি। তারা ওই তিনজনকে নিয়েই কলেজে প্রবেশ করতে চান। এমনকি গত ১৬ মে থেকে ফরম পূরণের বিষয়ে অধ্যক্ষসহ অন্য শিক্ষকদের একাধিকবার বলা সত্ত্বেও তারা বিষয়টি গুরুত্ব দেননি।তারা বলেন, রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিষয়টি যখন সাংবাদিকদের জানানো হলো, ঠিক সেই মুহূর্তে অধ্যক্ষ ওই তিন শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন। ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা হওয়া তিন শিক্ষককে নিয়েই দুপুর আড়াইটার দিকে প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে শিক্ষকরা ফরম পূরণ না করে ফিরে যান।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, যেখানে মন্ত্রণালয় আমাদের দাবির বিষয়টি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন, সেখানে আমাদের কলেজ কর্তৃপক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের সঙ্গে অবিচার করছে। রোববার শেষ দিনেও আমাদের ৪০০ শিক্ষার্থীর চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে দেয়নি। ফলে আমাদের শিক্ষাজীবন এখন অনিশ্চিত।
এ বিষয়ে বরিশাল নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা আক্তার রুমি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই তাদের ফরম পূরণের জন্য ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীরাই আমাদের প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে দেননি। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে বাধ্য হয়ে ফিরে এসেছি।
Post Comment