Loading Now

বরিশালে সিএসও ও এনজিও প্রতিনিধিদের নিয়ে সহিংসতা বিষয়ক সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

বরিশাল বিভাগ এর বিভিন্ন জেলা, সিএসও ও এনজিও প্রতিনিধিদের নিয়ে ”সমমর্যাদা, পিতৃতান্দ্রিক, সামাজিক লিঙ্গ এবং অনলাইন ভিত্তিক সহিংসতা” বিষয়ক দিন ব্যাপি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এস ইউ ভিওর আয়োজনে এবং ফাউন্ডেশন ফর উইমেন পসিবিলিটিসের সহযোগিতায় সোমবার ২৩ জুন সকাল সাড়ে ৯ টায় সেইন্ট বাংলাদেশের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন হেড অব প্রোগ্রাম, জেন্ডার জাস্টিস ও এডভোকেসি বিভাগ- ফরিদা বেগম এবং সেই সাথে উপস্থিত ছিলেন উইমেন পসিবিলিটিসের নির্বাহী পরিচালক জনাব ফসিউল আহসান সহ প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তাবৃন্দ। এস ইউ ভিওর নির্বাহী পরিচালক হাছিনা বেগম নীলা এবং বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বিভিন্ন পেশা ও শ্রেনীর নেতৃবৃন্দ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। সারাদিন ব্যাপী আলোচনায় সামাজিক লিঙ্গ পরিচিতি থেকে শুরু করে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা,লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা, ডিজিটাল অপরাধ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয় এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে গুরুত্ব দিক তুলে ধরে আলোচনা করা হয়।

প্রশিক্ষনে বলা হয় বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতার মূলে রয়েছে মনস্তত্ব, পিতৃতান্ত্রিক ও বৈষম্যমূলক আইন। পিতৃতন্ত্র বলতে বোঝায় পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা, যেখানে পুরুষেরা সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে নারীদের উপর কর্তৃত্ব করে। আর লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা হলো লিঙ্গ (gender) সম্পর্কিত কারণে সংঘটিত সহিংসতা, যা নারী ও পুরুষ উভয়ের বিরুদ্ধেই হতে পারে, তবে নারীরাই এর শিকার বেশি হন। ইতিহাস থেকে দর্শন, শিক্ষা কারিকুলাম কিভাবে কখনো নারীর প্রতিকূলে এবং কখনও অনূকুলে থেকেছে ও রাজনীতির দুর্বৃত্তায়নও নারীর প্রতি সহিংসতার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলছে তা নিয়ে অংশগ্রহনকারীরা তাদের উপলব্দি প্রকাশ করেন। রাষ্ট্র এর আগে নিজের নিরপেক্ষ মনোভাব, আপসহীন হতে হবে এবং নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ না করলে সমাজের ভেতরে এই অবক্ষয় রুখে দাঁড়ানো যাবে না। পরিবারের দায়িত্ব নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা।

সভায় আরও বলা হয়, নারীর প্রতি পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি অনেকাংশে কালের পরিবর্তনে কিছুটা পরিবর্তন হলেও বেশিরভাগ এখনও ভোগবাদী মনোভাব পোশন করে। অথচ নারী-পুরুষ উভয়েই পরিবার ও সুষ্ঠ সুন্দর সমাজের জন্য পারস্পারিক সহযোগীতা, সমানূভুতি অনিবার্য। পরিবার টিকিয়ে রাখার জন্য যেমন নারী-পুরুষের সম্মিলিত উদ্যোগ, পরিকল্পনা, ত্যাগ ও সংযমের প্রয়োজন, একইভাবে সামাজিক স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে নতুন সমাজ বিনির্মাণের জন্য উভয়েরই ভূমিকা ও অবদান সমভাবে প্রয়োজন। সে জন্য একজনকে উপেক্ষা করে বা বাদ দিয়ে কেবল পুরুষ কিংবা কেবল নারীর পক্ষে বেশিদূর এগোনো সম্ভব নয়। তাই আমরা চাই, নারী-পুরুষের সৌহার্দ্যপূর্ণ সমঝোতামূলক সম্পর্ক, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সম্পর্ক। কিন্তু আমাদের এ চাওয়ার সফল বাস্তবায়ন পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে কোথাও চোখে পড়ছে না। বরং প্রতিনিয়ত উল্টো ও সাংঘর্ষিক ঘটনা ঘটছে।
পরিশেষে, পিতৃতন্ত্র সমাজ ব্যবস্থার কিছু ক্ষতিকর নিয়ম ও সামাজিক লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা নিয়ে আরোও বেশি আলোচনা দরকার। এই ধরনের সভায় সমস্যাগুলো সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে, এর কারণ ও প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতে এবং সমাধানের পথ খুঁজতে সাহায্য করে।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED