Loading Now

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (বাকসু) ও হল সংসদ সংবিধি চূড়ান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (Barishal University Central Students’ Union – BUCSU) সংক্ষেপে বাকসু এবং হল সংসদ গঠনের জন্য প্রণীত খসড়া সংবিধি চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত এই সংবিধির নাম রাখা হয়েছে, “বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদসমূহের গঠন ও পরিচালনা সংবিধি।

(৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সংবিধিটি প্রকাশিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক চর্চার ক্ষেত্রে এই উদ্যোগকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আইনি ভিত্তি ও মূলনীতি ; এই সংবিধিটি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) আইন, ২০১০-এর ধারা ৩৫ (ড) অনুযায়ী প্রণয়ন করা হয়েছে। সংবিধির প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, এটি মহামান্য আচার্যের অনুমোদন লাভের সাথে সাথেই কার্যকর হবে। ছাত্র সংসদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে তিনটি মৌলিক নীতিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ও সামাজিক সুবিচার এই তিনটি মূলনীতিকে ধারণ ও লালন করা। শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা এবং তাদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশে ভূমিকা রাখা। শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে সর্বোচ্চ অ্যাকাডেমিক ও সহশিক্ষামূলক সুবিধা প্রাপ্তিতে সহায়তা করা।

কেন্দ্রীয় সংসদের কাঠামো ও পদ ; সংবিধি অনুযায়ী, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এবং বিভিন্ন আবাসিক হলের জন্য হল সংসদ—এই দুই স্তরে ছাত্র সংসদ গঠিত হবে। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (বাকসু)-এর নির্বাহী কমিটি মোট ২৫ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদাধিকার বলে সভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মধ্য থেকে উপাচার্যের মনোনয়ন অনুযায়ী কোষাধ্যক্ষ হবেন। বাকি ২৩ জন পদাধিকারী ও নির্বাহী কমিটির সদস্য সরাসরি সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হবেন। সরাসরি ভোটে নির্বাচিত পদাধিকারীদের মধ্যে থাকবেন: সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস), সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস), এবং ১১ জন বিভাগীয় সম্পাদক ও ১১ জন নির্বাহী কমিটির সদস্য।

নির্বাচনী বিধি ও যোগ্যতা; ভোটার ও প্রার্থী: ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রথম বর্ষ স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া নিয়মিত শিক্ষার্থী এবং স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাই কেবল ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

​অযোগ্যতা: যেসব শিক্ষার্থী কোনো সরকারি বা বেসরকারি সংস্থায় পূর্ণকালীন চাকুরিরত, কিংবা সান্ধ্যকালীন কোর্স, পেশাদার/নির্বাহী বা বিশেষ মাস্টার্স কোর্স, এমফিল/পিএইচডি, ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স বা ভাষা কোর্সে অধ্যয়নরত, তারা ভোটার বা প্রার্থী হতে পারবেন না।

মেয়াদ: নির্বাচিত পদাধিকারীদের দায়িত্বকাল হবে ১ বছর। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না হলে নির্বাচিত ব্যক্তিরা সর্বোচ্চ ৯০ দিন বা নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর সংসদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিলুপ্ত হবে।

​বিভাগীয় সম্পাদকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: মুক্তিযুদ্ধ, বিপ্লব ও গণতন্ত্র বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক, পরিবহণ সম্পাদক ও সমাজসেবা সম্পাদক।

নির্বাচনী বিধি ও যোগ্যতা ; ভোটার ও প্রার্থী: ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রথম বর্ষ স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া নিয়মিত শিক্ষার্থী এবং স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাই কেবল ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

হল সংসদের গঠনতন্ত্র ; সংবিধির তৃতীয় ভাগে হল সংসদসমূহের গঠনতন্ত্রের বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। হল সংসদগুলোতেও সহ-সভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সহ বিভিন্ন পদে সরাসরি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি হল সংসদেই হল প্রভোস্ট পদাধিকার বলে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

শিক্ষার্থী ও সচেতন মহলের প্রত্যাশা, এই সংবিধি কার্যকর হলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক-প্রশাসনের মধ্যে আরও নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হবে এবং শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবে।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED