বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: ছাত্র সংসদ নির্বাচন চায় ৮৬% শিক্ষার্থী!
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) অনুষ্ঠিত চারদিনব্যাপী গণভোটে অংশ নিয়েছেন ১১৪৫ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৮৬ শতাংশ শিক্ষার্থী সরাসরি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে এক আনুষ্ঠানিক আয়োজনে এ ফলাফল প্রকাশ করে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল। আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন ভূমিকা সরকার এবং সঞ্চালনায় ছিলেন মৃত্যুঞ্জয় রায়।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক নিশান। আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠক আব্দুর রহমান, সুদীপ্ত হালদার, সওকাত ওসমান স্বাক্ষরসহ একাধিক শিক্ষার্থী প্রতিনিধি। গণভোটের ফলাফল তুলে ধরা হয় নির্বাচন কমিশন প্যানেলের সদস্যদের পক্ষ থেকে। এতে দেখা যায়—
মোট ভোটার: ১১৪৫ জন
ছাত্র সংসদ চান: ৯৮৭ জন (৮৬%)
ছাত্র সংসদ চান না: ১৩২ জন (১১.৫%)
বাতিল ভোট: ২৬টি (২.৫%)
এই গণরায়ের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জবাবদিহিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃত্ব চায়। তারা বিশ্বাস করে, গণতান্ত্রিক চর্চাই একটি আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থার মূল চালিকা শক্তি।
ছায়েদুল হক নিশান বলেন, গণভোটে শিক্ষার্থীরা যে রায় দিয়েছে তা ববি শিক্ষার্থীসিহ সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের মতের বহিঃপ্রকাশ। এটা গোটা বাংলাদেশের সমস্ত শিক্ষার্থীর। দাবি এ কারণে তাদের মতের গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আইন আছে সেটাকে সংস্কার করে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনের রুপরেখা প্রদান করতে হবে।
তিনি বলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ না থাকলে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়। যেই রাজনীতি অতীত সরকার গুলো করে গেছে। শিক্ষার্থীদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে কি হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় যেকোনো ধরনের ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহন প্রক্রিয়ার জন্য ছাত্রদের মতামত প্রতিফলিত হওয়ার প্রয়োজনে ছাত্র সংসদের কোন বিকল্প নেই।
ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করার জন্য বছরের পর বছর কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকার গুলো ছাত্র সংসদকে অকার্যকর করে রেখেছে। আরেক দল ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের নাম করে গোপন রাজনীতি করে যাচ্ছে। যা গণতান্ত্রিক পরিবেশের জজ্য হুমকি।
ফলে অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের রায় মেনে নিয়ে কার্যকর করা এবং সরকারের দায়িত্ব। এবং গণতান্ত্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিনির্মানে আগামী দিনে দৃষ্টান্ত হিসেবে ভূমিকা রাখবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শুধুমাত্র কর্মচারী কেরানী না বানিয়ে রাষ্ট্রের জন্য দায়িত্বশীল, শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষের রাজনীতি নির্মানে ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ভূমিকা সরকার বলেন “আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষার্থীদের মতামতই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই গণভোট প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে— এখনই সময় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পথ সুগম করার।”
Post Comment