Loading Now

মাইয়াডারে ওরা বাঁচতে দিলোনা!

চরফ্যাসন প্রতিবেদক ॥

‘আমার মাইয়াডা শান্ত আছিলো, যৌতুকের টেহার লইগা ওরা আমাগো মাইয়াডারে বাঁচতে দিলোনা। এহন আমাগো ছোট্ট নাতিডার কি অইবো। মাইয়াডায় আসা কইরা নতুন ঘর বানাইছে, এহন থাকতে পারলে না’। একমাত্র কন্যা সন্তানকে হারিয়ে এভাবেই আহাজারী করছিলেন নিহত গৃহবধু মিমের বাবা মোসলেউদ্দিন চৌকিদার। মেয়ের মরদেহের পাশে জ্ঞান হারিয়ে পড়েছিলেন মা জোসনা বেগম। বাবা- মায়ের অন্তহীন আহাজারীতে ভারি হয়ে উঠেছে এওয়াজপুর ইউনিয়নেয় দক্ষিণ মাদ্রাজ গ্রামের গৃহবধু মিমের বাড়ি। সন্তান হারা বাবা মায়ের আহাজারীতে কাঁদছে পাড়া প্রতিবেশী ও স্বজনরা। বৃহস্পতিবার সকালে নিহত গৃহবধু মিমের বাড়িতে গেলে এমন চিত্র দেখা যায়।

তিনবছর আগে এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত করিম এর ছেলে ওমান প্রবাসী ইসমাঈলের সঙ্গে পরিবারিকভাবে মিমের বিয়ে হয়। বিয়ের ৬ মাস পর অন্ত:স্বত্ত্বা স্ত্রী মিমকে রেখে স্বামী প্রবাসে পাড়ি জমান। বিয়ের পর থেকেই স্বামী ইসমাঈল ও তার মা রাশিদা বেগম ও ননদের জামাই ইমন মিমের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা দাবী করে আসছিলেন। এ নিয়ে শ্বাশুরীর সঙ্গে তার প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ হতো।

এরপর তার বাবার সহযোগিতায় প্রবাসী স্বামী তার বসতবাড়ির কাছে জমি কিনে ছোট্ট একটি বাড়ি নির্মান করেন। সেখানে দোচালা একটি টিনের ঘর নির্মান করে মিম তার দেড় বছরের শিশু কন্যা ইসরাতকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন। মেয়ের নিরাপত্তার জন্য মিমের মা রাতে মেয়ের সঙ্গে জামাতার বাড়িতে থাকতেন। ঘটনার দিন বুধবার বিকালে তার শিশু কন্যা ইসরাত খেলার ছলে একটি কুকুরের ওপর পড়ে যায়।

এসময় শিশুর হাতে কুকুরের নখের আঘাত লাগে। এ নিয়ে রাতে মিমের শ্বাশুড়ী ও ননদসহ তার জামাতা ইমন মিলে তার বাড়িতে গিয়ে তাকে এলোপাথাড়ি মারধর করেন। পরে সকালে ওই গৃহবধু নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

নিহত গৃহবধুর বাবা মোসলেউদ্দিন এর দাবী মেয়ের শ্বাশুড়ী ও ননদসহ তার জামাতার মারধরের অপমান সইতে না পেরে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেন।

শশীভূষণ থানার উপ-পরিদশর্ক মিজবাহ উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা মর্গে পাঠিয়েছেন। প্রাথমিক সুরতহালে তার গালের চোয়ালে একটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED