Loading Now

মাছের বাজারে আগুন, সবজির বাজার ঠান্ডা

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
বরিশালের বাজারগুলোতে সবজির দাম অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে। সবজি কিনে ক্রেতারাও স্বস্তি প্রকাশ করেছে। কাঁচা মরিচ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। সপ্তাহ ব্যবধানে বাজারে সরবরাহ বাড়ায় ইলিশ মাছের বিক্রি বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় ইলিশের দাম কিছুটা কমার কথা থাকলেও সে পরিমানে কমেনি। তবে চলতি সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। বাড়তি দাম স্থিতিশীল রয়েছে চালের বাজারে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) বরিশালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

বাজারে বেগুন প্রকারভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০/৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০/৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ঝিঙা ৬০ টাকা, কাঁচা আম ৬০৭০ টাকা এবং পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে বাজারে করলার দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০/৮০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে সবজির দাম স্থিতিশীল থাকায় কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। তাদের মতে গত বছর এই সময় বাজারে সব কিছুর দাম আগুন ছিল। সে অনুপাতে এ বছর সব কিছুর দাম সহনশীল রয়েছে।

পোটরোড বাজারে কেনাকাটা করতে আসা ইমাম হোসেন বলেন, সবজির দাম স্থিতিশীল। গত বছর এই সময় কোনো সবজি ৮০/১০০ টাকার নিচে কেনা যায়নি। এবছর একটু কম। তারপর বলতে হয় একশ্রেনীর মানুষ আছে যাদের নিত্যপণ্য কিনতে কষ্ট হচ্ছে। দাম আর একটু কম হলে ভালো হতো।

বাজারে সোনালি কক মুরগি ৩১০ টাকা এবং সোনালি হাইব্রিড মুরগি ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগির কেজি ২৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৭০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি কেজিতে১৬০১৭০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৬৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরবরাহ বাড়ায় গত সপ্তাহের তুলনায় ইলিশের দাম কিছুটা কমেছে। বাজারগুলোতে ইলিশের কেজি আকারভেদে এক হাজার ৩০০ টাকা থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চাষের শিংয়ের (আকারভেদে) কেজি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, দেশি শিং ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চাষের পাঙাশের কেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পোয়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছ কিনতে আসা ক্রেতা আজিজুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ইলিশ তো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই চলে গেছে। কেজিতে অন্তত তিনশো টাকা বেড়েছে সপ্তাহ ব্যবধানে। অন্যান্য মাছের দামও চড়া।’

বিক্রেতারা বলছেন, ‘সরবরাহ কম থাকায় চড়া ইলিশের বাজার। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য মাছের দামেও। ইলিশ বিক্রেতা মো. শুকুর আলী বলেন, সাগরে এবার ইলিশ কম ধরা পড়ছে। যা ধরা পড়েছ তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এতে বেড়ে গেছে দাম।’

আর এক মাছ বিক্রেতা বলেন, বর্ষা ও বন্যার কারণে চারিদিকে পানি উঠে ভরে গেছে। যে কারণে মাছ ধরা না পড়ায় দাম বাড়তি। বর্ষার পানি নেমে গেলে মাছ ধরা পরবে। তখন সরবরাহ বাড়লে মাস্টার দাম এমনিতেই কমে যাবে। তিনি আরও বলেন, এই সময় মাছের দাম একটু বেশি থাকে। নদী কিংবা সাগরে মাছ ধরা না পরলে কিছু করার নেই।

গরুর মাংসের কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসির মাংস এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজারে নতুন করে দাম না বাড়লেও আগের উচ্চমূল্যই ভোগাচ্ছে ক্রেতাদের। বাজার রোডের চাল ব্যবসায়ী রাকিব হাওলাদার বলেন, নতুন করে দাম বাড়েনি। তবে কমারও কোনো সুখবর নেই। বর্তমানে মিনিকেট চালের কেজি ৮২-৮৫ টাকা, মোটা চাল ৫৬-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আদা ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, রসুন দেশি মানভেদে ১০০/১২০ টাকা এবং ইন্ডিয়ান ১৮০/২০০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, খেসারির ডাল ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাজার করতে আসা গৃহিণী রেহানা বেগম বলেন, ‘প্রতিদিন বাজারে এলেই শুধু আফসোস। সব জিনিসের দামই বেড়েছে, সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

এদিকে বাজারে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০/১৩০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০/১০০ টাকা।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED