Loading Now

মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবী ছাত্রদল নেতার!অত:পর বহিষ্কার!

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবী ছাত্রদল নেতার
“না পারলে, মিনহাজ ভাই আমাকে যে স্টেপ নিতে বলছে…”
স্টাফ রিপোর্টার ॥ মামলার ভয় দেখিয়ে ববি ছাত্রদল নেতা মিনহাজুল ইসলাম’র বিরুদ্ধে মোটা অংকের অর্থ দাবী করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে অর্থ চাওয়ার স্ক্রীনশর্ট ও ভয়েস রেকর্ড ফাঁস হয়। যা এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। জানা যায়, গত ২ অক্টোবর ‘মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ববি ছাত্রদল’ শিরোনামে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। আর এই সংবাদকে কেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নাম ব্যবহার করে কিছু নেতা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে অর্থ আদায়ের মিশনে নেমেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেন।
তবে এরই মাঝেই গত মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাত ১২টায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষনা করা হয়।
কমিটি বিলুপ্ত হলেও বর্তমানে অর্থ চাওয়ার মিশন বন্ধ করেনি ওই ছাত্রদল নেতারা।
হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজ এর স্ক্রীনশর্ট থেকে জানা যায়, সদ্য বিলুপ্ত হওয়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য মিনহাজুল ইসলাম এর পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে অর্থ চেয়ে আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদ্দিন হলের সহ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ইমদাদুল হক। এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজে মিনহাজুল ইসলাম, ইমদাদুল হকের সাথে ওই শিক্ষার্থীকে যোগাযোগ করতে বলেন। পরবর্তীতে ইমদাদুল হক ওই শিক্ষার্থীকে পরপর তিনটি ভয়েস ম্যাসেজ পাঠান। সেখানে ইমদাদুল হক বলেন,
“ভাই তোমারে তো আমি কই নাই তুমি আমাকে লাখ টাকা দেও এখন। আমি তোমাকে তো বলছি আমি বেসিক স্টেপ নিবো, তাতে যে খরচটা হবে সেটা তোমাদের সবার কাছ থেকে ভাগাভাগি করে নিচ্ছি। কেউ ৩০ কেউ ৪০ করে দিচ্ছে। তোমাকে বলছি তুমি আপাতত ৩০ পাঠাও। আমি যখন যাবো ১৫/২০ দিন পর, প্রাথমিক স্টেপ নেয়ার পরে, যখন ভেরিফিকিশনে যাবে, তখন আমি তোমাকে বলবো আসলে তুমি কি করতে পারবা। এখন তো তুমি বলতে পারো ভাই আমার কাছে নাই, আমি পৌছে দিচ্ছি। তুমি তো বলতে পারো না, আমি পারতেছি না। এটা তো আসলে তোমার সাথে কমপ্রোমাইজ হলো না। তোমার সাথে তো ডিল হলো না। তোমার ইচ্ছে প্রকাশ হইলো। তাহলে আমাকে আমার মতো করে কাজ করতে হবে। তুমি যদি এটা বুঝো তাহলে আমাকে এটার উত্তর জানাও। আমি একটু ব্যাস্ত আছি ভাই”।
“ভাই তোমাকে আমি একটা শেষ কথা বলি, তুমি আজকে রাতের মধ্যে যদি ২০ ম্যানেজ করতে পারো, এটা পাঠাও। তাহলে কালকে তুমি কি করবা এটা তোমার ব্যাপার”। “যদি তুমি আজকে ২০ না দিতে পারো, তাহলে আমি আজকে তোমার পক্ষে প্রস্তাবই রাখতে পারবো না। যে ভাই আমার এ আছে এইটা করতে চায়। এ জায়গা থেকে তুমি দেখো কি করবা। না হলে এটা কোন মিচ্যুয়াল হলো না। যেটা করতে চাও ওইটাই হয়ে গেলো”।
“ভাই দেখো তোমাকে আমি শেষ কথা বলতেছি আমি কিছু জানি না। তুমি যদি ২০ ম্যানেজ করতে পারো তাহলে আমাকে বলো। না পারলে, মিনহাজ ভাই আমাকে যে স্টেপ নিতে বলছে, সেই স্ক্রিনশর্ট আমি আপনাকে দেখাবোনি সমস্যা নাই”।
তবে এ বিষয়ে গতকাল রাতে ইমদাদুল হক এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে মিনহাজুল ইসলাম গতকাল রাতে এ প্রতিবেদককে জানান, মামলার কোন ভয়ের বিষয় না, ২০২২ সালে আমার ওপর ২২ জন মিলে হামলা করে, ওখান থেকে ৩/৪ জন আমাকে মারে নাই, ওরা বাদ। এ নিয়ে আমি বলেছি এখন মামলা করবো। এখন থেকে একজন দুইজন আমাকে ফোন দিয়ে বলতেছে দেখ বন্ধু আমার তো বাবা মারা গেছে, এখন মামলা দিলে আমি ফাইসা যাবো, আমি তোর মামলার স্বাক্ষী হবো এবং তোকে কিছু ক্ষতিপূরণ দেই। এই পর্যন্তই আর কিছু। আমি কাউকে মামলার ভয় দেখাই নাই।
এবিষয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের একাধিক নেতার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, বিষয়টি তারা অবগত এবং দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্যদিকে কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদ প্রকাশের পর

অভিযুক্ত এই  নেতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। শনিবার ১২ অক্টোবর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছাত্রদল জানায় মিনহাজুল ইসলামকে প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED