শহীদ সাগরের এক বছর: বাবার বাকরুদ্ধ বেদনা, মায়ের দুঃসহ স্মৃতি
আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি ।।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত আগৈলঝাড়ার সাগর হাওলাদারকে হারিয়ে এক বছর ধরে শোকে পাথর হয়ে আছেন তাঁর মা আম্বিয়া বেগম। গভীর রাতে ঘুম ভেঙে গেলে ছেলের ছবি নিয়ে ছুটে যান কবরস্থানে। সারা দিন কাজের ফাঁকে ছেলের স্মৃতি মনে করে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
পরিবারের সদস্যরা জানান, অনেক সময় তাঁকে ঘরে না পেলে পরে দেখা যায় কবরের পাশে বসে কাঁদছেন। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাবা নুরুল হক হাওলাদারও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। বাকরুদ্ধ হয়ে কাটাচ্ছেন দিন। কোনো কাজকর্মে মন দিতে পারছেন না। বাড়িতে কেউ এলেই অঝোরে কাঁদতে থাকেন তিনি।
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের বাগধা গ্রামের বাসিন্দা সাগর হাওলাদার (১৭) ছিলেন ধানমন্ডি লেকপাড়ের একটি চায়ের দোকানের কর্মচারী। সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে এবং ছোট বোনের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে তিনি ঢাকায় যান।
২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীর আবাহনী মাঠসংলগ্ন পুলিশ বক্সের কাছে আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে তাঁর দুই পা গুলিবিদ্ধ হয়। পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ জুলাই মারা যান সাগর।
সাগরের বাবা নুরুল হক হাওলাদার বাগধা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী। তাঁদের দুই সন্তান—এক ছেলে সাগর ও এক মেয়ে মরিয়ম।
সাগরের চাচা মইনুল হোসেন বলেন, ‘সাগরের স্বপ্ন ছিল বিদেশে গিয়ে আয় করে পাকা বাড়ি বানাবে, সবার আলাদা ঘর হবে, বোনের পড়াশোনার ব্যবস্থা করবে। সব স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে রূপ নিল। যারা সাগরকে গুলি করেছে, আমরা তাদের ফাঁসি চাই।’
সাগরের ছোট বোন মরিয়ম খানম (৭ম শ্রেণি) এখন বাড়ির এক কোণে চুপচাপ বসে থাকে। কারও সঙ্গে কথা বলে না, ডাকলেও সাড়া দেয় না।
বাড়ির উঠানে বসে থাকা সাগরের দাদা আবদুল মজিদ হাওলাদার (৭৫) শুধু চোখের পানি ফেলেন। নাতির মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিনিও।
তথ্য সূত্র: আজকের পএিকা,,,,,,
Post Comment