সবজি-মুরগির দাম চড়া, স্বস্তি নেই চালেও
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
অস্থির হয়ে উঠছে বরিশালের নিত্যপণ্যের বাজার। বর্ষার অজুহাতে বাজারগুলোতে সবজির দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের সবজির কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।
একইসঙ্গে বেড়েছে পেঁয়াজ, ডিম ও মুরগির দাম। আর চাল ও অন্যান্য মাছ বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। তবে সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও দাম কমেনি ইলিশের।
এদিকে বাজারে ডিমের দাম হঠাৎ বেড়েছে। প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। শুক্রবার (১ আগস্ট) বরিশালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরবরাহ ভালো থাকলেও বর্ষার অজুহাতে গ্রীষ্মকালীন সবজির বাজার চড়া রয়েছে। এসব বাজারে বেগুন প্রকারভেদে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৮০০ থেকে ১১০ টাকা, বরবটি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০/৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ প্রকারভেদে ১৬০ থেকে ২৪০ টাকা ও পেঁপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে করলার দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০থেকে ৬০ টাকা, টমেটো কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা, ইন্ডিয়ান গাজর ১৪০ টাকা, দেশি শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
একাধিক সবজি বিক্রেতারা বলছেন, কোনো কোনো সবজিতে ১০-২০ টাকা বাড়লেও কোনো কোনো সবজিতে দাম কমেছে। মূলত অতিবৃষ্টির কারণে ফসল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ব্যাঘাত ঘটছে সরবরাহ ব্যবস্থায়। , তারা আটও বলেন ‘বর্ষা শেষ হচ্ছে। এখন অনেক সবজির মৌসুমই শেষের দিকে। নতুন সবজি না ওঠা পর্যন্ত দাম বাড়তির দিকে থাকবে। দুই সপ্তাহের মাথায় নতুন সবজি উঠলে ধীরে ধীরে দাম আরো কমবে।
বাজারে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী হাসিবুল হাসান বলেন, ‘একেক দিন একেক জিনিসের দাম বাড়ছে। কী কিনবো, আর কী ফেলে যাবো বুঝতে পারি না। কিছু কিছু সবজির দাম আগের মতো। তবে বেড়েছে বেশিরভাগ সবজির দাম। বৃষ্টির অজুহাত দিয়ে দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।’
বাজারগুলোতে লালশাক ১৫ টাকা আঁটি, লাউশাক ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কলমিশাক ২ আঁটি ২০ টাকা, পুঁইশাক ৫০/৭০ টাকা ও ডাটা শাক দুই আঁটি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে আলু ২২ থেকে ২৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৬০/৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে সোনালি কক মুরগি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৩৩০/৩৪০ টাকা এবং সোনালি হাইব্রিড মুরগি ৩০০/৩১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগি ৩২০ টাকা, সাদা লেয়ার ৩০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৫০/১৬০টাকা ও দেশি মুরগি ৬৬০/৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার করতে আসা মাহবুবা বেগম বলেন, ‘চলতি মাসের শুরুতেও শাকসবজির দাম কিছুটা কম ছিল। এখন সব কিছুর দাম অনেক বাড়তি। ভালো কোনো সবজি কিনতে গেলে ৮০-১০০ টাকা লেগে যায়। এভাবে চলতে থাকলে তো আমাদের ওপর চাপ বাড়তে থাকবে। সরকারকে অবশ্যই নিত্যপণ্য সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখতে হবে।’ মাছের যে দাম তা কেনা বন্ধ করে দিয়েছি। বাচ্চাদের জন্য কিনতাব ডিম আর বয়লার মুরগি সেটাও এখন কিনতে হয় দ্বিগুণ দামে। বাজার মনিটরিং সেলের কঠোর নজরদারি না থাকা ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিজেদের ইচ্ছে মত পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কোন সরকারই।
অন্যদিকে সরবরাহ বাড়লেও গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। বাজারগুলোতে এক কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার ৫০০/৭০০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে এক কেজি শিং চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পোয়া ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসির মাংস কেজি প্রতি ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে আদা ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, রসুন দেশি আকার ভেদে১০০/১১০ টাকা, ইন্ডিয়ান ১৮০ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারির ডাল ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে মিনিকেট চাল প্রকারভেদে ৮২ থেকে ৯২ টাকা, স্বর্ণা ৫৫/৬২ টাকা ও ২৮ বিক্রি হচ্ছে ৬৫/৭০ টাকা কেজি দরে।
Post Comment