সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটে ফেলতে পারে: তারেক রহমান
অনলাইন ডেক্স ।।
শহীদদের রক্তের বিনিময়ে বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী অপশক্তি রাষ্ট্র-রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ নিতে ওত পেতে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেছেন, সরকারের যে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত দেশের গণতন্ত্র উত্তোলনের যাত্রা বা পথকে সংকটে ফেলে দিতে পারে। দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ, চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। কাজেই এ ব্যাপারে সবাইকে, বিশেষ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে, থাকা প্রয়োজন।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের আশুলিয়ার শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন দারুল ইহসান মাদরাসার মাঠে ঢাকা জেলা বিএনপির আয়োজনে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত বছরের জুলাইয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেই আন্দোলনে কিন্তু শ্রমজীবী মানুষের হয়তো সরাসরি কোনো স্বার্থ জড়িত ছিল না। কারণ তারা কোনো সরকারি চাকরির আশা করেননি। তাহলে প্রশ্ন আসে পোশাক কারখানার শ্রমিক, রিকশাচালক, দিনমজুর, ভ্যানচালক, অটোরিকশাচালক, ট্রাকচালক, হেলপার, দোকান কিংবা রেস্তোরাঁ কর্মী অথবা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ, সব শ্রেণিপেশার মানুষ কেন সেদিন রাজপথে নেমেছিল? একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে, রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি একটি কারণ খুঁজে পাই। এর কারণ একটাই—দেশের সব শ্রেণিপেশার মানুষ বিশ্বাস করেছেন, রাষ্ট্রক্ষমতায় ক্ষমতালোভী ফ্যাসিস্ট যে পালিয়ে গিয়েছে, তারা যদি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, জনতা—কেউ তাদের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার ফেরত পাবে না।’
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সাভার-আশুলিয়ায় শ্রমিকদের ওপরে গণহত্যা চালানো হয়েছিল। হত্যার পরে মরদেহগুলোকে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘মরদেহের সঙ্গে এমন বর্বরতা, এমন নির্মমতা, কারবালার যে নৃশংসতা তাকেও হার মানিয়েছে।’
এসময় তিনি বলেন, ৫ আগস্টের ফ্যাসিস্টদের পলায়নের দিন সাভার-আশুলিয়ায় শ্রমিকদের ওপর গণহত্যা চলেছিল, মানুষের ওপর গণহত্যা চলেছিল।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সাভার-আশুলিয়ায় কিংবা অন্য কোনো সুবিধাজনক এলাকায় শ্রমজীবী কর্মজীবী মানুষের আত্মত্যাগের সম্মানে একটি বিশেষ স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীর পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হোসান খান, সহ-পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ডা. সালাউদ্দিন বাবু, আশুলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল গফুর, ঢাকা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মন্ডল, ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান অভি, সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান মোহনসহ ঢাকা জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া তাদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়।
Post Comment