Loading Now

স্মরণকালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বরিশালে, জনজীবন বিপর্যস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

বরিশালে মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে তাপমাত্রার পরদ ৩.৩ ডিগ্রি নিচে নেমে স্মরণকালের সর্বনিম্ন ৯.১ ডিগ্রিতে স্থির হয় বুধবার সকালে। তবে বরিশালের সন্নিহিত এলকায় তাপমাত্রা সাড়ে ৮ ডিগ্রীতেও নেমে গেছে।

আর বরিশালের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের গোপালগঞ্জে বুধবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ফলে শৈত্য প্রবাহের দাপটে বরিশাল সহ সন্নিহিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ এখন সব বর্ণনার বইরে। সুস্থ জনজীবন ভয়াবহ বিপর্যয়ের কবলে।

তবে বুধবার সকাল থেকে মেঘ আর গত কয়েকদিনের কুয়াশা সরিয়ে সূর্যের দেখা মেলায় বেলা বাড়ার সাথে জনমনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে।

কিন্তু সূর্যের দেখা মিললেও হালকা কুয়াশার কারণে রোদের তেমন তেজ ছিলনা। ফলে বুধবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের প্রায় ৬.৫ ডিগ্রি নিচে, ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া বিভাগ বৃহস্পতি ও শুক্রবার দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়ে শনিবার তা অপরিবর্তিত থেকে পরবর্তী ৫ দিনে আবার তাপমাত্রা হ্রাসের কথা বলা হয়েছে।

মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করলেও এর একটি বর্ধিতাংশ বরিশাল উপক’ল সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

অব্যাহত শৈত্য প্রবাহে দক্ষিণাঞ্চলের জনস্বাস্থ্যেও সংকট প্রকটাকার ধারণ করছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে ইতোমধ্যে বরিশাল অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ১০ হাজার নিউমোনিয়া ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ সহ ঠান্ডাজনিত রোগী ভর্তি হবার খবর দেয়া হয়েছে।

এমনকি অব্যাহত ঠান্ডায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে। সরকারী কোন হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের মেঝেতেও এখন রোগীর ঠাঁই মিলছে না। ওষুধ সহ চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব না থাকলেও রোগীর ভিড়ে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদেরই প্রাণ ওষ্ঠাগত। ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবাও।

অপরদিকে চলমান শৈত্যপ্রবাহে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান দুটি অর্থকরী ফসল, বোরো বীজতলা ও গোল আলু এখন চরম ঝুঁকি মুখে।

চলতি রবি মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে প্রায় ৩.৮৫ লাখ হেক্টরে বোরো আবাদের লক্ষ্যে ২০,৩১৭ হেক্টরে বোরো বীজতলা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে।

কিন্তু লাগাতার শৈত্য প্রবাহে এসব বীজতলায় ‘কোল্ড ইনজুরী’র শংকায় উদ্বিগ্ন কৃষিবীদগন। পাশাপাশি প্রায় ১৫ হাজার হেক্টরে যে গোল আলুর আবাদ হচ্ছে, তাও ‘লেট ব্লাইট’ নামের এক ধরনের ছত্রাকবাহী রোগে আক্রান্ত হবার শঙ্কাও ক্রমশ প্রবল হচ্ছে।

তবে এ শৈত্যপ্রবাহ বরিশাল কৃষি অঞ্চলে আবাদকৃত ৬০ হাজার হেক্টরে গমের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে জানিয়েছেন কৃষিবীদগন। চলতি রবি মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে প্রায় ১৬ লাখ টন বোরো চাল ও প্রায় ৪ লাখ টন গোল আলু ও দুই লক্ষাধিক টন গম উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED