Loading Now

হোয়াইট হাউসে সৌদি যুবরাজকে লাল গালিচায় ‍উষ্ণ অভ্যর্থনা ট্রাম্পের

অনলাইন ডেক্স ।।

যেমন খদ্দের তেমন কদর— সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতিউচ্ছ্বাস আর নজিরবিহীন অভ্যর্থনায় সেই সত্যটিই আবার স্বতঃসিদ্ধ করে তুলল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর যুবরাজ সালমানই একমাত্র ভাগ্যবান অতিথি যার আপ্যায়নে আতিথেয়তার অতিশয়োক্তির ছাপ পড়েছে হোয়াইট হাউজে। মাথার ওপরের আকাশ থেকে অন্দরমহলের আয়োজন— সবখানেই ছিল মনভোলানোর চমক। রাষ্ট্রপ্রধান না হয়েও মঙ্গলবার যে সম্মান তাকে দিয়েছেন ট্রাম্প, সবচেয়ে ঘনিষ্ঠবন্ধু ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু থেকে শুরু করে ইউরোপের পরমানু শক্তিধর কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের কপালেও তা জোটেনি! কিন্তু কেন এই আপ্যায়ন অতিরঞ্জন? মহা-আড়ম্বরে সেই কারণও উড়ছে ইউরোপ-আরবসহ গোটা পৃথিবীর আকাশে। এক ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য চুক্তি (প্রতিশ্রুতি)! যা বিশ্বশাসনে নয়া জোয়ার সৃষ্টি করবে মার্কিন অর্থনীতিতে। রয়টার্স, সিবিএস নিউজ।

মূলত এই এক ট্রিলিয়ন ডলার চুক্তিকে কেন্দ্র করেই এদিন ভিন্ন সাজে মেতে ওঠে হোয়াইট হাউজ। জাঁকজমক আয়োজনে কোনো কমতি রাখেননি ট্রাম্প। লাল গালিচা থেকে শুরু করে তোপধ্বনি, অশ্বারোহী বাহিনী এমনকি সামরিক ব্যান্ডের পসরা সাজিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পুরো হোয়াইট হাউজজুড়ে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি পতাকা। ট্রাম্প ও সালমানের করমর্দনের পর পরই হোয়াইট হাউজের মাথার ওপর ‘গার্ড অব অনার’ দেয় একসঙ্গে ৬টি এফ-৩৫ ও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। সেগুলো ‘ভি’ আকৃতিতে মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যায়।

মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে পৌঁছান যুবরাজ সালমান। তার আগেই সাউথ লনের ফটকের সামনেই লাল গালিচায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ট্রাম্প। গাড়ি থেকে নামতেই দুই পা এগিয়ে তার সঙ্গে করমর্দন করেন ট্রাম্প। সাউথ লনের সামনে সে সময় সৌদি পতাকাবাহিত কালো ঘোড়ার আনুষ্ঠানিক শোভাযাত্রা পুরো অনুষ্ঠানটিকে আরও বর্ণাঢ্য করে তোলে। এরপর তাকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে হোয়াইট হাউস ঘুরিয়ে দেখান প্রেসিডেন্ট। যুবরাজকে রোজ গার্ডেনের পাশে প্রেসিডেন্টদের নবনির্মিত প্রতিকৃতি গ্যালারি দেখাতে নিয়ে যান। এরপর ওভাল অফিসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং ইস্ট রুমে মধ্যাহ্নভোজ। সন্ধ্যায় আরও একবার লাল গালিচা অভ্যর্থনা জানানো হয় এমবিএস খ্যাত সৌদি রাজপরিবারের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই যুবরাজকে। সে সময় ট্রাম্প ছিলেন কালো টাক্সেডো ও বো টাই পরিহিত এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প পরেছিলেন স্ট্র্যাপলেস পান্না-সবুজ গাউন। ক্রাউন প্রিন্সকে নিয়ে যাওয়া হয় ইস্ট রুমে। যেখানে তার সম্মানে আয়োজন করা হয়েছিল আড়ম্বরপূর্ণ ক্যান্ডেললাইট ব্ল্যাক-টাই ডিনারের। সচরাচর ট্রাম্প রাষ্ট্রপ্রধানদের আপ্যায়নে এমন মহাধুমধামের ডিনার পার্টি করেন না। কিন্তু সালমানের মনজয়ে এখানেও ব্যতিক্রম ছিলেন তিনি। ঐতিহাসিক ওই ব্ল্যাক-টাই ডিনারে ইলন মাস্ক, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোসহ বিশ্বের ১২০ জন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ৩০ জন ছিলেন সৌদি প্রতিনিধি।

খাবারের তালিকা:

ব্ল্যাক-টাই ডিনারে পরিবেশন করা হয়েছিল বিলাসবহুল তিন পদের খাবার। অতিথিদের দেওয়া হয় ক্রানবেরি রেলিশ ও ব্রাউনবাটার ক্রিমসহ হানিনাট স্কোয়াশ স্যুপ। প্রধান খাবারের মধ্যে আরও ছিল পিস্তাকিওক্রাস্টেড র্যাক অব ল্যাম্ব। এটি মিষ্টি আলুর পিউরে ও আনারের জুসের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। ডেজার্ট ছিল আরও লোভনীয়। মিষ্টিতে মূলত দুটি আইটেম পরিবেশন করা হয়। সেগুলো হলো— কুভার্চার চকলেট মুস পিয়ার এবং মোলায়েম ভ্যানিলা আইসক্রিম।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো হতাশ:

২০১৮ সালে ইস্তান্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার পর এটিই সালমানের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর। অভিযোগ উঠেছিল— সালমানই খাশোগিকে হত্যার মূলহোতা। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে সালমানের এমন অভ্যর্থনায় হতাশ মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তবে ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দিয়েছেন— প্রিন্স সালমান এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কিছুই জানেন না। ওভাল অফিসে ট্রাম্প বলেন, সালমান তার ‘খুব ভালো বন্ধু’ এবং মানবাধিকার বিষয়ে তার কাজ ‘প্রশংসনীয়’। ডন এর নির্বাহী পরিচালক সারা লিয়া হুইটসন বলেন, ‘সালমানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমালোচনার পরও হোয়াইট হাউসে এমন উচ্চপর্যায়ে স্বাগত পাওয়া অসাধারণ রাজনৈতিক পরিবর্তন।’

তথ্য সূত্র : যুগান্তর,,,,

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED