Loading Now

৪ আগস্টই নতুন সরকার গঠনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়: নাহিদ ইসলাম

অনলাইন ডেক্স ।।

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ঠিক আগের দিন গত বছরের ৪ আগস্ট নতুন সরকার গঠন নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা আলোচনা করেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ওই দিন ড. ইউনূসকে নতুন সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জুলাই–আগস্টে সারাদেশে চালানো হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার দ্বিতীয় দিন এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

এ নিয়ে এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ৪৭ জন। মামলার আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক রয়েছেন। অপর আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন।

নাহিদ ইসলাম তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, ‘গত বছরের ৪ আগস্ট শাহবাগে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করি। ওই দিনই ৬ আগস্ট মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি ঘোষণা করি। সরকার তখন কারফিউ ঘোষণা করে এবং দেশব্যাপী ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। আমরা জানতে পারি, ৬ আগস্টের কর্মসূচি ব্যর্থ করার উদ্দেশে সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটসেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমাদের হত্যা বা গুম করা হতে পারে। এজন্য আমরা মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি একদিন এগিয়ে ৫ আগস্ট নির্ধারণ করি।’

তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট সারাদেশ থেকে মানুষ ঢাকায় আসতে থাকে। আমরা শাহবাগে অবস্থান করি। শহীদ মিনার ও চানখারপুল এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়। সেনাবাহিনী একপর্যায়ে শাহবাগের রাস্তা ছেড়ে দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে ওই এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। আমরা শুনতে পাই, ঢাকার প্রবেশমুখগুলো দিয়ে লাখ লাখ মানুষ প্রবেশ করছে। আমরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ থেকে গণভবনের উদ্দেশে রওনা দেই। পথিমধ্যে খবর পাই, গণবিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে গেছে। ওইদিন সারাদেশে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের খবর পাই।’

ট্রাইবুযনালকে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সংবাদ সম্মেলন করে আমরা সমন্বয়করা সকল রাজবন্দীর মুক্তি এবং অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানাই। আমরা এও জানাই, কোনও ধরনের সেনাশাসন বা সেনাসমর্থিত শাসন আমরা মেনে নেব না।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশ ও বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরা অস্ত্র দিয়ে গুলি চালায় ও নির্যাতন করে।’

জুলাই-আগস্টে সব হত্যাকাণ্ড ও নৃশংস ঘটনার জন্য ক্ষমতাচুযত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশ ও বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের দায়ী করেন নাহিদ। ট্রাইব্যুনালের কাছে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন তিনি।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED