৭০/৮০ টাকার নিচে মিলছে না সবজি
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
চাহিদা অনুযায়ী গ্রীষ্মকালীন সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে দাম। এর সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে মুরগির বাজারের ঊর্ধ্বগতি। যা ভোক্তাদের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে। শুক্রবার (২ মে) পোর্টরোড বাজার, নতুন বাজার, বাংলা বাজার, সাগরদি কাঁচাবাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সবজিই এখন ৭০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। ৮০ টাকার নিচে পছন্দের কোনো সবজি মিলছে না। হাতে গোনা কয়েকটি সবজি এর ব্যতিক্রম।
আজকের বাজারে প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, বেগুন ৮০-১১০ টাকা, বরবটি ৭০/৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০-৮০ টাকা, কচুর লতি ৭০/৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০/১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৭০ টাকা, ঝিঙে ৭০-৮০ টাকা এবং টমেটো ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজির মধ্যে পেঁপে ৬০ টাকা, গাজর ৫০/৬০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা, পটোল ৫০-৬০ টাকা এবং সজনে ডাটা ১২০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, প্রতিটি চালকুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার এবং সবজির মান-আকারভেদে দাম কমবেশি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ এখনো পুরোপুরি শুরু না হওয়ায় দাম কিছুটা বেশি। তাছাড়া শীতকালীন সবজির সরবরাহও প্রায় শেষের দিকে। তারা আরও বলেন, হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি শুরু হওয়ার কারনেও সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়িতি। বর্ষার মৌসুম এভাবে চলতে থাকলে দাম আরও বাড়বে।
সাগরদী বাজারের একাধিক সবজি বিক্রেতা বলেন, শীতের অধিকাংশ সবজিই এখন শেষ। আর গ্রীষ্মের কিছু সবজি বাজারে আসা শুরু করেছে মাত্র। পুরোপুরি সরবরাহ শুরু হলে দাম এমনিতেই কমে যাবে। আর যদি টানা বৃষ্টি হয় তাহলে দাম আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভালো পছন্দের সবজি নিতে হলে ৭০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, গত এক সপ্তাহে মুরগির দাম কেজিতে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ কিছুটা কমে যাওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় ১০-২০ টাকা বেশি। সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০-৩০ টাকা বেড়ে ২৭০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, দেশি মুরগি ৬৫০-৬৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৮০ টাকা এবং লাল লেয়ার ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের দাম জাতভেদে প্রতি পিস ৬০০-৭০০ টাকা।
তবে, গরু ও খাসির মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও আলুর দাম স্থিতিশীল রয়েছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু ১৫/২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, আদা ১২০ টাকা কেজি, আমদানি করা রসুন ১৮০-২২০ টাকা এবং দেশি রসুন ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে পহেলা বৈশাখ থেকে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। সামনে দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
মাছের বাজার এখনো আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি রুই ৩৫০-৪২০ টাকা, কাতল ৩৮০-৪৫০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০-২৫০ টাকা, কোরাল ৭৫০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০-২৩০ টাকা এবং তেলাপিয়া ১৫০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বিক্রেতারা বলছেন, ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। আর ডিমের ডজন ১৩০ টাকা। হালিতে ডিমের দাম ২ টাকা ও ডজনে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। এছাড়া হাঁসের ডিম ২২০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
দামের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা গরমের সুযোগ নিয়ে সিন্ডিকেট করে সবজির দাম বাড়াচ্ছেন। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের পকেটে।
আলম বেপারী নামের এক ক্রেতা বলেন, সবকিছুর দাম বাড়তি। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের শুধু চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানাই।
Post Comment