পিরোজপুরে চাহিদার তুলনায় বেশি কুরবানির পশু, ভারতীয় গরু নিয়ে শঙ্কা!
পিরোজপুর প্রতিনিধি ।।
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে শুরু হয়ে গেছে কুরবানির পশুর হিসাবনিকাশ। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসবকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন পিরোজপুরের সাত উপজেলার খামারিরা। দম ফেলারও ফুরসত পাচ্ছেন না তারা। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে।
এবার জেলাটিতে চাহিদার চেয়ে বেশি কুরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। তবে চাষি, খামারিদের মুখে লোকসানের শঙ্কা, সীমান্ত থেকে অবাধে ঢুকছে ভারতীয় গরু যার কারণে ভালো দাম না পাওয়ার শঙ্কা তাদের।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুরে এবার কোরবানিযোগ্য পশুর চাহিদা আছে ৪০ হাজার ২৫৭টি। এর বিপরীতে প্রস্তুত আছে অন্তত ৪৬ হাজার ৭১৭টি পশু। উদ্বৃত্ত থাকছে ছয় হাজার ৪৬০টি বিভিন্ন জাতের পশু।
পিরোজপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুদেব সরকার জানান, এ বছর জেলায় কুরবানির জন্য ২৬ হাজার ৯২০টি গরু, ২১০টি মহিষ, ১৭ হাজার ৭০০ ছাগল ও এক হাজার ৮৮৭ ভেড়া প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, পিরোজপুরে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার উদ্ধৃত্ত পশু থেকে যেতে পারে। উদ্বৃত্ত পশু দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চাহিদা মেটাতে সহায়ক হবে। উদ্বৃত্ত পশু সড়কপথে ঢাকা কিংবা নিকটস্থ বিভাগীয় শহরে নিয়ে বিক্রয় করারও সুযোগ রয়েছে খামারিদের।
এদিকে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি, অপরদিকে সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু প্রবেশ করাচ্ছে একটি মহল এমনটি অভিযোগ করে পিরোজপুরের চাষি ও খামারিরা।
মালেক হাজরা নামের এক চাষি জানান, তিনি কোরবানির জন্য ২ টি গরু প্রস্তুত রেখেছেন। কিন্তু প্রথম যখন গরু পালন করতেন তখন যে খাবার ৭-৮শত টাকা দাম ছিল সেই খাবার এখন ১৪-১৫ শত টাকা। গরু পালন করে লাভের আশায় এখন দেখি লোকসান গুনতে হবে।
মো. ঈব্রাহিম নামের এক খামারি বলেন, আমার খামার আছে সঙ্গে গরু কিনে বিক্রি করি। এ বছর হাটে গরুর দাম বেশি চায় বিক্রেতারা কিন্তু ক্রেতা নেই তেমন। আবার নতুন করে যোগ হয়েছে ভারতীয় গরু। যার কারণে দেশি গরুর দাম বেশি চাইলে ক্রেতা চলো যায়।
মাহাতাব নামের এক খামারি বলেন, ভারতীয় গরু যেভাবে ঢুকেছে তাতে এ বছর কোরবানির জন্য যে গরু মজুত রেখেছি বিক্রি করতে হবে লোকসানে। চাষি ও খামারিদের অনুরোধ সরকারের কাছে দ্রুত যেন বন্ধ করা হয় ভারতীয় গরু প্রবেশ।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রানা মিয়া বলেন, জেলায় এমন কোনো গ্রাম খুঁজে পাওয়া কঠিন যেখানে খামার নেই। খামারি ও আমাদের কর্মকর্তাদের যৌথ প্রচেষ্টায় এটি সম্ভব হয়েছে। যদি সারা দেশে গরু মোটা-তাজাকরণের খামার তৈরি করা যায় তাহলে একদিকে যেমন মাংসের ঘাটতি পূরণ হবে। তেমনি বেকার সমস্যাও অনেকাংশে কমে আসবে।
Post Comment