ঈদের আগে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ‘বড় সুখবর’
অনলাইন ডেক্স ।।
মহার্ঘ ভাতা নিয়ে অনেক দিন ধরেই সরকারি চাকরিজীবীরা আশায় বুক বাঁধছেন। এবার ঈদুল আজহার ঠিক আগ মুহূর্তে এ ব্যাপারে সুখবর পেলেন তারা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মহার্ঘ ভাতার কথা উল্লেখ করা না হলেও সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আগামী জুলাই থেকে সরকারি কর্মচারীদের বেতন ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে প্রস্তাবিত সুবিধার হার স্পষ্ট করে বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করা হয়নি।
সোমবার (২ জুন) বিকেলে জাতীয় বাজেট উপস্থাপনকালে এই ঘোষণা দেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘২০১৫ সালের পর থেকে কোনো নতুন বেতন কাঠামো না হওয়ায় সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।’
২০১৫ সাল থেকে সরকারি কর্মচারীরা নিয়মিতভাবে ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট পেয়ে আসছেন। এছাড়া ২০২৩ সালের জুলাই থেকে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ হারে একটি বিশেষ প্রণোদনাও চালু রয়েছে, যা এখনো বহাল রয়েছে। গত অর্থবছরের বাজেটেও তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বিশেষ সুবিধার কথা বলেছিলেন। পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এই বিশেষ ভাতা ৫ শতাংশ বাড়িয়ে মোট ১০ শতাংশে উন্নীত করেন।
অর্থ বিভাগের একাধিক সূত্র জানায়, নতুন বাজেটে প্রথম থেকে নবম গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১৫ শতাংশ এবং ১০ম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পেতে পারেন। এ সুবিধা কার্যকর হবে আগামী ১ জুলাই থেকে।
বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
প্রতি পাঁচ বছর পরপর সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন কাঠামো হওয়ার নিয়ম রয়েছে। ২০১৫ সালে সবশেষ বেতন কাঠামো কার্যকর করা হয়। এরপর আর কোনো বেতন কাঠামো হয়নি। এ কারণে মহার্ঘ ভাতার বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকেও সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতার বিষয়টি আলোচনায় উঠেছিল। তবে সরকারের আর্থিক টানাপড়েনের কারণে সেই আলোচনা বেশি দূর আগায়নি। রাজনৈতিক দলগুলো থেকে বিরোধিতাও আসে। গেল ১৮ জানুয়ারি ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দিলে তা নিঃসন্দেহে সমস্যা সৃষ্টি করবে। এই সময়ে মহার্ঘ ভাতা তো মূল্যস্ফীতি বাড়াবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের, তাদের তো কোনো আয় বাড়ছে না। এটা একটা সমস্যা। এই বিষয়গুলো আপাতত খুব বেশি প্রয়োজন ছিল না।’
তবে গত ১৩ মে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করা হবে এবং নতুন বাজেটে এর জন্য বরাদ্দ থাকবে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মহার্ঘ ভাতা সংস্থানের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে গত ডিসেম্বরে সাত সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সেই কমিটি প্রায় চার মাস করে একটি সুপারিশ তৈরি করে। সুপারিশ অনুযায়ী, গ্রেডভিত্তিক ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
Post Comment