Loading Now

বৃষ্টি হলে সৃষ্টি হয় দুর্বিষহ পরিস্থিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

প্রতিষ্ঠার দুই যুগ পার হয়ে গেলেও বরিশাল নগরীতে গড়ে ওঠেনি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম চলছে সেই সনাতন পদ্ধতিতেই। নগরীর সড়কের পাশে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা, অসংখ্য খোলা ডাস্টবিন। ময়লা ফেলা হচ্ছে দিনভর। বেশিরভাগই গৃহস্থালির ময়লা-আবর্জনা। নেই ড্রেনজ ব্যবস্থা, খোলা বাথরুম, যানবাহনের চাকায় জড়িয়ে সেই ময়লা ছড়িয়ে পড়ছে নগরীর সড়কে। দুর্গন্ধ থেকে রেহাই পেতে হাঁটতে হয় নাক-মুখ চেপে। খোলা ট্রাকে বহন করা হয় ময়লা। উন্মুক্ত স্থানে ডাম্পিং স্টেশন হওয়ায় বিপর্যস্ত পরিবেশ। বৃষ্টি হলে সৃষ্টি হয় দুর্বিষহ পরিস্থিতি। এসব নিরসনের জন্য গত দুই দিন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকার ওয়াশ ও বজ্র ব্যাবস্থাপনা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছে বরিশাল আভাস কর্তৃক বাস্তবায়িত এসকেএস ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ”রাইজিং ফর রাইটস্ ফর ষ্ট্রেনদেনিং সিভিল সোসাইটি নেটওয়ার্ক ইন সাউথ এশিয়া টু এচিভ এসডিজি৬” প্রকল্পের আওতায় ফানসা নেটওর্য়াক এর পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা। এসময় বিসিসির ৩০ টি ওয়াডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো পরিদর্শক করে রিপোর্ট করাহয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থানিয় সুশিল সমাজ, ফানসা বিডি নেটওর্য়াক সদস্য, যুব সংগঠক, সাংবাদিক, নারী নেত্রী, শিক্ষক, প্রতিবন্ধী প্রতিনিধি, হরিজন সম্প্রদায় প্রতিনিধি সহ প্রায় ৩৫জন অংশগ্রহনকারী একটি দল। এর ধারাবাহিকতায় আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় আভাসের মিলনায়তনে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এর পরিচ্ছনতা কর্মকর্তা মো: ইউসুব আলী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দীপক লাল মৃধা। সভাপতিত্ব করেন আভাসের প্রোগ্রাম ডায়রেক্টরমআফরোজা বিলকিস।
সভায় নগরব্যাপী অন্তর্ভূক্তিমূলক স্যানিটেশন ও স্যানিটেশন পরিসেবাসমূহের নিরাপদ ব্যবস্থাপনা ও বরিশাল সিটি-কর্পোরেশন এলাকার ওয়াশ সমস্যা এবং লক্ষিত কমিউনিটির অধিকারগুলিকে মোকাবেলা করার জন্য উন্নত ও স্বচ্ছ পরিষেবার জন্য কর্তব্যরত সেবাপ্রদানকারীদের অবহিত করা, কমিউনিটি ভিত্তিক অংশগ্রহনমূলক মনিটরিং বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন সাথে কমিউনিটির জনসাধারণের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার উপর গুরুত্বপূর্ণ আরোপ করা হয়। সভায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকার, কাউনিয়া খালপাড়, মধুমিয়ার পোল খাল পাড় , এলাকার স্যানিটেশন অবস্থা, ও রুপাতলী পাবলিক লেট্রিন সম্পর্কে তুলে ধরা হয়। এসময় বলা হয় বরিশাল নগরীর মানুষ এখন সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে চারিদিকে এখন ডেঙ্গু আতঙ্ক। ময়লা আবর্জনা,বাথরুম পরিস্কার না থাকায় মশা বাড়ছে। মশা নিধনের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। যার ফলে ডেঙ্গু বাড়ছে।

সভায় আরও বলা হয় নগরীর অলিগলি ও সড়কের অন্তত দেড়শ স্থানে খোলা ডাস্টবিনে (অস্থায়ী) আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বর্জ্যও ফেলা হচ্ছে খোলা ডাস্টবিনে। পরে সেই বর্জ্য খোলা ট্রাকে নেওয়া হচ্ছে উন্মুক্ত ডাম্পিং স্টেশনে। এতে নগরীর পরিবেশ দূষণ হচ্ছে।

‘পুরানপাড়া উন্মুক্ত ডাম্পিং স্টেশনটির ধারণক্ষমতা অনেক আগেই শেষ হয়েছে। সেখানে আধুনিক ব্যবস্থাপনা নেই। আবর্জনা ফেলার কারণে আশপাশের জমি ও সাপানিয়া খালের পানি নষ্ট হয়ে গেছে। কয়েকশ মিটার দূর থেকেও দুর্গন্ধ নাকে যায়। মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ডাম্পিং স্টেশনের আশপাশের কয়েক হাজার মানুষ।’

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে আরও আন্তরিক হতে হবে। কার্যকর ও স্বাস্থ্যসম্মত বর্জ্য সংগ্রহ পদ্ধতি, জনসচেতনতা বাড়ানো, ওয়ার্ডভিত্তিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা উন্নত করা, বর্জ্য পৃথকীকরণ ও পুনঃচক্রায়নের মাধ্যমে বর্জ্যের পরিমাণ কমানো, বিভিন্ন শোধন পদ্ধতি ব্যবহার করে ডাম্পিং স্টেশনে যাওয়া বর্জ্যের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে।

এছাড়া পাবলিক টয়লেট গুলোর দিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়।

 

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED