বরিশালে দুই গ্রামের যোগাযোগের একমাত্র কাঠের ব্রিজটি এখন ঝুঁকিপূর্ন
মেহেদী হাসান ।।
বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া ফুলতলা নদী। যে নদীর দুই পাড়ে গড়ে উঠে ডিঙ্গা মানিক ও শালুকা গ্রাম। পূর্বে দুই গ্রামের সহজ যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিলো খেয়া পারাপার, তবে ভারী বর্ষণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তো যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ হিসেবে পরিচিত পায় ফুলতলা নদীটি।
দুর্ভোগ লাঘবে প্রায় ৪ বছর পূর্বে গ্রামবাসীরা নিজস্ব অর্থায়নেই গাছের গুড়ি ও কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরী করে ২৫০ ফুট দৈর্ঘ্যর একটি কাঠের সংযোগ ব্রিজ। শুরুতে ব্রিজটি দিয়ে মোটরসাইকেল ও ভ্যান চলাচল করলেও বর্তমানে নড়বড়ে অবস্থার কারণে ব্রিজটি পার হতে হয় পায়ে হেটে।
সরজমিনে দেখা যায়, শালুকা গ্রামে অবস্থিত মিরাবাড়ি বাজার, শালুকা সেকেন্ডারী স্কুল ও শালুকা দারুসুন্নাত রশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ৫-৭ হাজার লোক প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্নভাবে চলাচল করে ব্রিজটি দিয়ে।
শালুকা গ্রামের গৃহবধূ দিলরুবা তিনি জানান, বিয়ের পর থেকেই দেখে আসছেন দুই গ্রামের মানুষের পারাপারের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকাই। ভারী বৃষ্টি হলেই বন্ধ হয়ে যেত নৌকা চলাচল। তখন গ্রামে কেউ অসুস্থ হলে কর্দমাক্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে বুখাইনগর বাজার হয়ে বরিশাল শহরে পৌছাতে হতো।
পরবর্তীতে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের সিদ্ধান্তে ৪ বছর পূর্বে নিজেদের অর্থায়নে গাছের গুড়ি ও কাঠের পাটাতন দিয়ে নির্মান করা হয় ব্রিজটি।
ডিঙ্গা মানিক গ্রামের ষাটোর্ধ্ব আব্বাস মিয়া বলেন, আমার দুই ছেলের সন্তানরা শালুকা দারুসুন্নাত রশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসাটিতে পড়ালেখা করে। আগে শালুকা গ্রামে যাতায়াতের মাধ্যম ছিলো খেয়া পারাপার। পরে ওই স্থান দিয়ে নিজের অর্থায়নে ব্রিজটি নির্মান হলেও বর্তমানে তা ঝুঁকিপূর্নবস্থায় রয়েছে। বড় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ার আশংকাও প্রকাশ করেন তিনি।
স্থাণীয়দের দাবী এই ব্রিজ শুধু দুই গ্রামের মাঝে যোগাযোগ নয়, এটি নিরাপত্তা, শিক্ষার সুযোগ, স্বাস্থ্যসেবার সাথেও জড়িত। তাই অতি দ্রুত ব্রিজটি সরকারী অর্থায়নে সংস্কার বা স্থায়ী ভাবে নির্মান করা হোক।
তবে এ বিষয়ে চরমোনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো: জিয়াউল করিম এর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইকবাল হোসেন জানান, স্থানীয়দের আবেদন পেলে ব্রিজটি মেরামত বা নতুন করে তৈরী করার চেষ্টা করা হবে।
Post Comment