বরিশালে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা আজ (শুক্রবার) থেকে শুরু হয়েছে। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় এই ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় অনুষ্ঠান। বরিশালের ইসকন আয়োজিত রথযাত্রা উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে শ্রী শ্রী রাধা শ্যামসুন্দর মন্দির। শুক্রবার বিকেলে বরিশালে উৎসবমুখর পরিবেশে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন সমাজ সেবক রাখাল চন্দ্র দে।
সেখান থেকে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) উদ্যোগে রথযাত্রা বের করা হয়। প্রতিবছর একটি রথে করে বলদেব, সুভদ্রা ও জগন্নাথকে নিয়ে যাত্রা হলেও এবারে তিনটি ভিন্ন রথে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
হাজার হাজার ভক্তের অংশগ্রহণে নগরীর বিভিন্ন মন্দির থেকে বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এসময় উপস্থিত ছিলেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের বরিশাল মহানগরের আহ্বায়ক এলবার্ট রিপন বল্লভ, সদস্য সচিব লিমন সাহা কানু, অধ্যক্ষ তপস্বী দাস ব্রক্ষ্মচারীসহ অতিথিবৃন্দ।
জানা যায়, প্রতিবছর একটি রথে করে বলদেব, সুভদ্রা ও জগন্নাথকে নিয়ে যাত্রা হলেও এবারে ভিন্ন আঙ্গিকে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রথম রথে বলদেব, তারপর সুভদ্রা ও শেষে জগন্নাথ দেব রথযাত্রা করে। রথযাত্রাটি নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে অমৃতাঙ্গনে এসে শেষ হয়।
সেখানেই বলদেব, সুভদ্রা ও জগন্নাথদেবকে স্থাপন করা হয়। এক সপ্তাহ পর উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
রথযাত্রায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে সুসজ্জিত রথ টেনে উৎসব পালন করে। এতে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। রথযাত্রা চলা অবস্থায় ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
ভক্তরা বলেন, “রথযাত্রা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্য ও ভক্তির প্রকাশ। আমরা চাই সবার অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব সম্পন্ন হোক।”
এরপর নগরীর সদর রোডস্থ জগন্নাথ মন্দির, হাটখোলা হরি মন্দির ও অন্যান্য মন্দিরগুলোত থেকে রথযাএা বের করা হয়।
বিশাল কাঠের রথে জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রাকে স্থাপন করে শহরের বিভিন্ন পথ প্রদক্ষিণ করা হয়। ভক্তরা ‘জয় জগন্নাথ’ ধ্বনি দিতে দিতে রথ টানেন। রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে বসে হিন্দু ধর্মীয় সামগ্রী, মিষ্টান্ন ও খেলনার অস্থায়ী মেলা, যা সব বয়সী মানুষের ভিড়ে মুখরিত ছিল।
রথ যাত্রায় আসা ভক্তবৃন্দরা বলেন, রথ টানা আমাদের জন্য শুধু উৎসব নয়, এটা আমাদের ভক্তি আর আত্মিক শান্তির বিষয়। এই দিনে রথ ছুঁতে পারাটাই বড় সৌভাগ্য মনে করি।”
রথযাত্রা অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সতর্ক ছিল পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক দল সার্বক্ষণিক নজরদারি করে। আগামী এক সপ্তাহ পর অনুষ্ঠিত হবে উল্টো রথ বা বহুডা যাত্রা, যেখানে দেবতারা আবার নিজ মন্দিরে ফিরে যাবেন।
Post Comment