Loading Now

লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার: ক্রেতা কম, দাম বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

নিত্যপণ্যের বাজারগুলোতে আগের মতোই বিক্রেতা আছেন। কিন্তু ক্রেতা নেই আগের মতো। বাজারে পণ্যের সমাহারের কমতি নেই , কিন্তু দাম ঊর্ধ্বমুখী। এদিকে বরিশালের বাজারগুলোতে সবজির চড়া মূল্যের কারণে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ।নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে না পেরে ভোক্তারা নীরবে চলে আসছেন। ক্রেতা না থাকার পরেও পণ্যের দাম বাড়া প্রসঙ্গে বিক্রেতারা বলছেন, বর্ষার কারণে চারিদিকে পানি উঠে তলিয়ে গেছে। তাই আগের মতো পণ্য আসছে না। চাহিদার তুলনায় পণ্য সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে। পানি নেমে গেলে সরবরাহ বাড়বে। তবে বর্ষার এই মৌসুমের পণ্যের দাম একটু বাড়তি থাকে। বিশেষ করে মাছ সবজির দাম।

কোরবানির ঈদের পর থেকে বেড়েই চলেছে চালের দাম। নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কতৃপক্ষ। যে কারণে চালের বাজার এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এরপর সবজির দামও গেলো সপ্তাহ থেকে দ্বিগুণ। সব মিলিয়ে চড়া দামে চাল আর সবজি কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এদিকে, মুরগি ও ডিমের বাজারদর কিছুটা কম। শুক্রবার (৪ জুলাই) বরিশালের বাংলা বাজার, সাগরদি বাজার, নতুন বাজার, পোটরোড বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশের প্রত্যন্ত এলাকার মোকামগুলোতেই চালের দাম বেড়েছে। সেখানে চালকল মালিকরা ঈদের পর কারবার চাঙা হওয়ার সঙ্গে দাম বাড়িয়েছেন, যে কারণে চালের দাম বেশি এখন। ঈদের পর প্রতি বস্তা চালের দাম সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

যে কারণে ঈদের আগের চেয়ে এখন প্রতিকেজি চাল মানভেদে ২ থেকে ৮ টাকা টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এখন খুচরায় প্রতি কেজি মোটা চাল (বিআর-২৮, পারিজা) মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা দরে। সরু চাল কেজি ৭৪ থেকে ৮০ টাকা এবং মিনিকেট ৭৬ থেকে ৮৪ টাকা। কাটারিভোগ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৬ টাকা কেজিতে।

ফইরাপট্রি বাজার রোড এলাকার একাধিক চাল বিক্রেতারা বলেন, পাইজাম, বিআর-২৮, মিনিকেটের দাম কেজিপ্রতি ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আগে ৬৮ টাকা কেজি দরে পাইকারিতে যে মিনিকেট চাল কিনতাম, গতকাল কিনেছি ৭৬ টাকা কেজি দরে।

এদিকে, ছোট বাজারে ও পাড়ার মুদি দোকানে দাম আরেকটু বেশি। চাল বিক্রেতা হারুন বলেন, ঈদের পর থেকে দোকান খুলে যে চালই অর্ডার দিচ্ছি, তারই দাম বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি। দিনাজপুর, নওগাঁ, কুষ্টিয়া সব মোকামে চালের দাম বাড়ছে।

বাজারে ঈদের পর থেকে নিম্নমুখী ছিল মুরগির দাম। কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সোনালি মুরগির দাম কেজিপ্রতি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

অন্যদিকে প্রতি ডজন ডিমের দাম নেমেছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। তবে এ দাম ডিম উৎপাদনকারীর জন্য লোকসানের বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা।

এদিকে এরমধ্যে মুদি পণ্যগুলো দাম তেমন হেরফের হয়নি। তেল, চিনি, ডাল, আটা, ময়দা, সুজি আগের দামে কেনা যাচ্ছে। কম দামে কেনা যাচ্ছে পেঁয়াজ, আলু, আদা, রসুনসহ অন্য নিত্যপণ্যও।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ ভালো থাকলেও সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের সবজি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।

এসব বাজারে বেগুন প্রকারভেদে ৬০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কচুর মুখী ৮০ টাকা, বাজারে প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে মাছের বাজারগুলো গত সপ্তাহের মতো দাম চড়া দেখা গেছে। এসব বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার ৭০০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ইলিশ ২ হাজার ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক কেজি শিং চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, দেশি শিং ১০০০ টাকা, রুই দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, চাষের পাঙাশ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসির মাংস কেজি প্রতি ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED