Loading Now

আগৈলঝাড়ায় জমজমাট নৌকার হাট

আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি ।।

বরিশালের আগৈলঝাড়ার বর্ষা মৌসুমে চলাচল, জীবিকা ও পণ্য পরিবহনের অন্যতম বাহন হচ্ছে নৌকা। বর্ষায় চলাচলের জন্য নৌকা কেনেন নিম্নাঞ্চলের লোকজন। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এলাকার জেলেদের মাছ ধরতে ও যাতায়াতের জন্য ডিঙিনৌকা দরকার হয়। সব মিলিয়ে বর্ষা মৌসুম এলে এখানে বেড়ে যায় নৌকার কদর।

আগৈলঝাড়া উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় নৌকা বিক্রির হাট সাহেবের হাট ও বাহাদুরপুর। সপ্তাহে দুই দিন নৌকা বিক্রির হাট বসে। এতে অনেক নৌকা নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। বিক্রি হয় ৪০০ থেকে ৫০০ নৌকা।সরেজমিনে কথা হয় নৌকা ক্রেতা গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের বাসুদেবপাড়া গ্রামের মো. শাহজাহান হাওলাদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি বরজ ও গরুর খাবার সংগ্রহের জন্য ৮ হাজার ৪০০ টাকা দিয়ে দুটি নৌকা কিনেছি।’

গৈলা গ্রামের শওকত ফড়িয়া বলেন, ‘মাছের ঘেরের জন্য একটি নৌকা কিনতে এসেছি।’ উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের কালবিলা গ্রামের নির্মল হালদার ও স্বপন মৌলি জানান, ‘বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ২৪টি নৌকা কিনে এই হাটে বিক্রির জন্য এনেছি। হাটে এখন পর্যন্ত ৮টি নৌকা বিক্রি করেছি। কাঠ ও লোহার মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছর নৌকার মূল্য একটু বেশি।’

সাহেবের হাট কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান শিকদার জানান, শতবর্ষের এই হাটে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার নৌকার হাট বসে। উপজেলাসহ বাইরের বিভিন্ন এলাকার ক্রেতা ও বিক্রেতাদের পদচারণে নৌকার হাট জমজমাট থাকে। উপজেলার গ্রামগুলো ঘুরে জানা গেছে, এসব এলাকার অসংখ্য পরিবার কাঠমিস্ত্রি পেশায় জড়িত। তাঁরা গ্রামাঞ্চল থেকে অপেক্ষাকৃত কম দামে গাছ কিনে কাঠ চেরাই করে নৌকা তৈরি করে থাকেন। এর মধ্যে জারুল, রেইনট্রি, চাম্বল, মেহগনি, কদম, রয়না, আম কাঠ দিয়ে ডিঙি ও ছোট-বড় আকারের নৌকা তৈরি করেন তাঁরা। বর্ষার কারণে কাঠমিস্ত্রিদের বাড়িঘর নির্মাণের তেমন কোনো কাজ থাকে না।

এ সময় কাঠ দিয়ে মিস্ত্রিরা তাঁদের নিজেদের বাড়িতে বসেই তৈরি করেন বিভিন্ন সাইজ ও ডিজাইনের নৌকা। গাছ কিনে চেরাই করে বাড়িতে নৌকা তৈরি করে তা বিভিন্ন হাটবাজারে বেচেন তাঁরা। নৌকার আকার ও কাঠের ওপর নির্ভর করে মূল্য নির্ধারিত হয়।

হাটে ৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে নৌকা বিক্রি হয়ে থাকে। একটি মাঝারি আকারের নৌকার মূল্য ৭-৮ হাজার টাকা। স্থানীয়রা ছাড়াও স্বরূপকাঠি, বানারীপাড়া, উজিরপুর, কোটালীপাড়া, মাদারীপুর থেকে পাইকারেরা এসে নৌকা কিনে নিয়ে যান।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED