কুয়াকাটা সৈকতে আবারও ভেসে এল মৃত ইরাবতী ডলফিন
কুয়াকাটা প্রতিনিধি ।।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে একদিনের ব্যবধানে আবারও ভেসে এলো মৃত ডলফিন। ৩ ফুট দৈর্ঘ্যের এ ডলফিনটি ইরাবতী প্রজাতির। এর পুরো শরীরে চামড়া উঠানো। ডলফিনটি দেখার জন্য স্থানীয়সহ ঘুরতে আসা পর্যটকরাও ভিড় জমিয়েছেন সৈকতে। বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে কুয়াকাটা সৈকতে এটি ভেসে আসে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন’র (উপরা) আহ্বায়ক কে এম বাচ্চু।
বাচ্চা এই ডলফিনটি ইরাবতী প্রজাতির, লম্বা ৩ ফুট । তবে এটি ৮ থেকে ১০ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। বাচ্চু জানান, আগের তুলনায় ডলফিনের মৃত্যুর সংখ্যা কমলেও এখনও মাঝে মধ্যে এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় ছোট-বড় দুটি ডলফিন এসেছে।
আমরা চাই সরকার ও সংশ্লিষ্ট গবেষণা সংস্থা এই মৃত্যুর কারণ নিয়ে আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান করুক। ডলফিন রক্ষা মানে আমাদের উপকূলের পরিবেশ রক্ষা করা। এটি একপ্রকার প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ। যা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য অপরিহার্য।
ডলফিন শুধু সমুদ্রের প্রাণী নয়, এটি সমুদ্র পরিবেশের স্বাস্থ্য ও ভারসাম্যের এক গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ডলফিনের উপস্থিতি সমুদ্রের ইকোসিস্টেমকে সুস্থ রাখে, মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যকে সুরক্ষা দেয় এবং স্থানীয় পর্যটন ও জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রেও অবদান রাখে।
উপকূলীয় পরিবেশ রক্ষা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন (উপরা) এই অঞ্চলের মানুষদের সচেতন করতে এবং সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
সমুদ্রের নীল অর্থনীতি, উপকূলের পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডফিশের ইকোফিশ-২ বাংলাদেশ প্রকল্পের সহযোগী গবেষক বখতিয়ার রহমান বলেন, এটি মূলত ইরাবতী প্রজাতির ডলফিন (Orcaella brevirostris)। রক্তাক্ত দাগ থেকে দেখা যায়, নৌযান, মাছ ধরার যন্ত্র ও জেলেদের কার্যক্রমই মৃত্যুর মূল কারণ।
নদী ও মোহনার দূষিত পানি যেমন শিল্প বর্জ্য, প্লাস্টিক ও তেল ও হুমকি সৃষ্টি করছে। গবেষকরা স্থানীয় সচেতনতা বৃদ্ধির এবং ডলফিন অভয়ারণ্য এলাকায় জাল ব্যবহারে সীমাবদ্ধতার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে কুয়াকাটার জলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকে।
কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, আমরা উপকূলজুড়ে কাজ করছি ডলফিন রক্ষায়। ২০২৫ সালে এ পর্যন্ত ৭টি ডলফিন মৃত অবস্থায় দেখা মিলেছে সমুদ্রসৈকতে। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। যাতে এই ডলফিনগুলোর মৃত্যুর সঠিক কারণ খুঁজে বের করা হয়।
বনবিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, মাত্রই আমরা খবর পেলাম। ঘটনাস্থলে টিম পাঠানো হয়েছে মৃত ডলফিনটিকে মাটি চাপা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। যাতে দুর্গন্ধ ছড়াতে না পারে।
Post Comment