শিরিনের সততা এখন বড় বাঁধা মানিক মিয়া মহিলা কলেজের একটি মহলের!
ফ্যাসিবাদের দোসর ও স্থানীয় এক প্রভাবশালী মহল মিলে বরিশাল নগরীর তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া কলেজ নিয়ে শুরু করেছে নতুন ষড়যন্ত্র। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক বিএনপি নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস জাহান শিরিনকে কলেজটির গর্ভনিং বডির সভাপতি মনোনিত করার পর থেকে তিনি যাতে ঐ পদে বসতে না পারেন সেজন্য উঠেপড়ে লেগেছে ঐ মহলটি। জানা গেছে বেসরকারি মহিলা কলেজ হিসেবে নগরীর আলেকান্দা এলাকায় এ কলেজটির অবস্থান। ঐ এলাকার সাবেক কাউন্সিলর যিনি বিগত দিনে আওয়ামী সরকারের সাথে পিঠ বাঁচিয়ে চলা কে এম শহিদুল্লাহ ঐ কলেজটিকে স্থানীয় কিছু লোকজন নিয়ে নিজের দখলে নিতে উঠেপরে লেগেছেন।কিন্তু শহিদুল্লাহর নামে রয়েছে একাধিক নারীঘটিত স্কান্ডাল।তার কাছে কিভাবে নিরপদ ঐ কলেজের নারী শিক্ষার্থীরা?এছাড়াও কলেজটির বর্তমান অধ্যক্ষ ও বেশকিছু শিক্ষকরা বিগত দিনে আওয়ামী রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত থাকার পাশাপাশি কলেজের কর্তৃত্ব নিজেদের হাতছাড়া করতে না চাওয়ায় চাচ্ছেন মনমত কমিটি। এ বিষয়ে আলাপকালে কলেজ অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) মোকলেছুর রহমান জানান,পুর্নাঙ্গ সভাপতি হিসেবে বিলকিস জাহান শিরিনের নিয়োগ বৈধ নয়।কারন আমরা তার নাম প্রস্তাব করি নি।তিনি নিজের ক্ষমতার জোড়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজের নামে কমিটি এনেছেন। আমরা বিষয়টি জানিয়েছি কর্তৃপক্ষকে।তারা রবিবার বিষয়টি দেখবেন বলে জানি এখন স্থানীয় লোকজন তাকে ( শিরিন) না চাইলে আমার কি করার আছে?আমি চাকুরী করি।
এ বিষয়ে আলাপকালে কলেজের দাতা সদস্য কে এম শহিদুল্লাহ বলেন,জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা গভর্নিং বডির সদস্যরা সবাই বসেছিলাম। সদস্যদের কেউ সভাপতি পদে শিরিনকে মানতে রাজি নন। বিষয়টি আমরা একাধিক মাধ্যমে উপচার্যকে জানিয়েছি।
কলেজের একটি সুত্র জানায়, বিলকিস জাহান শিরিন এর আগে ৯ মাস এডহক কমিটির দায়িত্বে ছিলেন, ঐ সময় কলেজে বহিরাগত কেউ প্রবেশ করতে পারতো না।এখন কলেজে প্রায়শই রাজনৈতিক দলের মিটিং হয়, চলে আড্ডাবাজি।বিলকিস জাহান শিরিন এ কারনে অনেকের বিরাগভাজন।এ শেষ কোথায় তা নিয়েই প্রশ্ন এখন সবার।বর্তমানে সরজারী কর্মকর্তা বানানোর জন্য গর্ভনিং বডি যে পায়তারা চালাচ্ছে তা শুধুমাত্র বিলকিস জাহান শিরিনকে ঠেকানোর জন্য কারন এর আগেও আওয়ামী সরকারের সময় ঐ কলেজের সভাপতি ছিলেন সাবেক মেয়র হিরন ও তার স্ত্রী জেবুন্নেছা আফরোজ এবং তৎকালীন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম।এরা প্রত্যেকেই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।এখন সরকারি কর্মকর্তারা সভাপতি হলে তারা নিজেদের দায়িত্বের পাশাপাশি কলেজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারবেন না এটা হবে ঐ স্বার্থান্বেষী মহলের প্লাসপয়েন্ট। তাছাড়া যার নাম সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সার্বিক আহসান হাবিব, তিনি নিজেও ফ্যাসিবাদের অন্যতম দোসড় সরকারী কর্মকর্তা। বিগত আওয়ামী সরকারের সময় ব্যপক প্রভাবশালী ছিলেন। ৫ আগষ্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এর পর এখন অনেকটা চুপষে গেছেন। তার বাসভবনেই থাকতেন শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই ও পদচ্যুত সিটি মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত।
কলেজের মধ্যকার একাধিক শিক্ষকরা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান,বিলকিস শিরিনের সভাপতি পদ ঠেকাতে কলেজ বন্ধের মধ্যে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) শিক্ষকদের নিকট থেকে সাদা কাগজে সাক্ষর নেয়া হয়েছে। কলেজের বেশিরভাগ শিক্ষকরা চায় সভাপতি একজন শিক্ষিত ও মার্জিত ব্যক্তি হোক,এক্ষেত্রে শিরিনকে নিয়ে কোন আপওি নেই তাদের।তারা অনেকেই প্রশ্ন করেন,যখন আওয়ামী মেয়র-মন্ত্রীরা ছিলেন তখন কিশোর মজলিস এর সমস্যা হয়নি? তখন তারা প্রতিবাদ করেনি কেন?এখন সরকারী কর্মকর্তা বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে কার স্বার্থে।
এ বিষয়ে জানতে কলেজটির সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া বিলকিস জাহান শিরিন বলেন,আমি ১২ বছর শিক্ষকতা পেশার সাথে যুক্ত ছিলাম। আমার এ কলেজ নিয়ে কোন স্বার্থ নেই।যারা কলেজটিকে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে চায় তাদের জন্য আমি সমস্যা।আমার তাদের নিয়ে কোন বক্তব্য নেই।জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আমি আমার দায়িত্ব পালন করে যাবো। এর আগেও ৯ মাস দায়িত্ব পালন করেছি কোন অপশক্তির কাছে মাথানত করি নাই, এখনো করবো না।
Post Comment