Loading Now

ডিজিটাল স্বর্ণের যুগে বিশ্ব, শুরু লন্ডন থেকে

অনলাইন ডেক্স ।।

লন্ডনের সোনার বাজারে আসতে যাচ্ছে বড় পরিবর্তন। বিশ্বের অন্যতম বড় স্বর্ণবাজারে এখন ‘ডিজিটাল স্বর্ণ’ চালুর প্রস্তুতি চলছে। এ উদ্যোগ নিলে বহু শতাব্দীর প্রচলিত সোনার বাণিজ্যে আসতে পারে যুগান্তকারী রূপান্তর।

ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডব্লিউজিসি) প্রস্তাব করেছে, লন্ডনের ভল্টে রাখা ফিজিক্যাল সোনার বারকে ভিত্তি করে ডিজিটাল টোকেন চালু করা হবে। এই টোকেনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘পুলেড গোল্ড ইন্টারেস্ট (পিজিআই)’। এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা প্রথমবারের মতো ৪০০ আউন্স ওজনের বড় সোনার বারকে ভগ্নাংশ আকারে কিনতে পারবেন। অর্থাৎ ছোট অঙ্কের বিনিয়োগ করেও সোনার মালিকানা পাওয়া যাবে।

ডব্লিউজিসির বাজার কাঠামো ও উদ্ভাবন বিভাগের প্রধান মাইক ওসউইন জানিয়েছেন, এ ডিজিটাল স্বর্ণ শুধু বিনিয়োগের জন্য নয়, বরং জামানত হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। এতে বাজারে নতুন ব্যবহার বাড়বে এবং অংশগ্রহণও অনেক বাড়বে।

বর্তমানে লন্ডনের স্বর্ণবাজারের পরিমাণ প্রায় ৯৩০ বিলিয়ন ডলার। প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি আউন্স স্বর্ণের লেনদেন হয়। এতদিন বাজার দুটি পদ্ধতিতে চালিত হতো—অ্যালোকেটেড গোল্ড ও আনঅ্যালোকেটেড গোল্ড।

অ্যালোকেটেড গোল্ডে নির্দিষ্ট সোনার বার বা কয়েনের সরাসরি মালিকানা থাকে এবং আনঅ্যালোকেটেড গোল্ডে নির্দিষ্ট বারের মালিকানা নেই, কেবল দাবির ভিত্তিতে সোনা কেনাবেচা হয়। কিন্তু আনঅ্যালোকেটেড পদ্ধতিতে ঝুঁকি হলো—যে প্রতিষ্ঠানের কাছে সোনা রাখা হয়, সেটি দেউলিয়া হলে বিনিয়োগকারীর দাবি ঝুঁকির মুখে পড়ে।

নতুন ডিজিটাল স্বর্ণ এ ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে আনবে। কারণ টোকেনধারীদের ভল্টে থাকা সোনার আইনি মালিকানা নিশ্চিত করা হবে। ফলে সোনা সহজে জামানত হিসেবে ব্যবহার করা যাবে, যেমনভাবে নগদ অর্থ বা বন্ড ব্যবহার করা হয়।

তবে সবাই এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছে না। বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান এজে বেলের পরিচালক রাস মোল্ড মনে করেন, প্রকৃত স্বর্ণপ্রেমীরা ডিজিটাল স্বর্ণকে গুরুত্ব দেবেন না। তাদের কাছে আসল আকর্ষণ হলো—সোনা একটি বাস্তব সম্পদ, যা ধীরে ধীরে সরবরাহ বাড়ায় এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে কাজ করে। ডিজিটাল জটিলতায় তারা আগ্রহী নাও হতে পারেন।

তবু বিশ্লেষকদের মতে, প্রযুক্তির এ সংযোজন ভবিষ্যতের স্বর্ণবাজারকে আরও স্বচ্ছ, সহজ ও বহুমাত্রিক করে তুলবে। প্রথম ধাপে লন্ডনকেন্দ্রিক হলেও, এই উদ্যোগ একসময় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্যান্য বাজারেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

তথ্যসূত্র : সিএনবিসি

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED