Loading Now

মাছ- মুরগির বাজার উত্তাপ, নাগালের বাইরে সবজির দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

বরিশাল সহ গোটা দক্ষিনাঞ্চলে খোলা বাজারে মাছ ও চালের দামে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ব্রয়লার মুরগিও। মাস খানেক আগে মুরগির দাম কমলেও ফের বাড়তে থাকে। গত সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১০-২০ টাকা বেড়েছে। তবে নাগালে আসছে না সবজির দাম। কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়া সবজির বাজার এখনো উর্ধমুখী।

এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা এর কারণ হিসেবে সরবরাহ কমের অজুহাত দিলেও ক্রেতারা বলছেন, এর পেছনে সিন্ডিকেটের হাত রয়েছে।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিদিনের নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যগুলোতে বাড়তি চাপ পড়েছে মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষের ওপর।
শুক্রবার বরিশালের বিভিন্ন বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দামে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বরিশালের বাজারগুলোতে সব ধরনের সবজি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।

এসব বাজারে ঝিঙা, করলা, বরবটি, বেগুন, কচুর লতি, কাকরোল, চিচিঙা ৮০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ প্রকারভেদে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা এবং পেঁপে ৩ থেকে ৪০ টাকা কেজি, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, শসা ৫০/ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০/ ৪০ টাকায়, চাল কুমড়া ৬০ টাকা পিস, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে লাল শাক ২০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৬০/৮০০ টাকা, কলমি শাক ১ আঁটি ২০ টাকা, পুঁই শাক ৬০/ ৮০ টাকা এবং ডাটা শাক দুই আঁটি ৪০/ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে আলু ২৫ টাকা, পেঁয়াজ ৭৫ ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া সোনালি কক মুরগি কেজিতে ৩২০ টাকা এবং সোনালি হাইব্রিড মুরগি ২৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগি ৩০০/৩২০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৯০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৯০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পুরান বাজারে মুরগি বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, সবজি-মাছসহ অন্যান্য পণ্যের চাহিদা বেশি। যে কারণে দামও সামান্য বেড়েছে। তবে ২০০ টাকা পযন্ত বেড়েছে মুরগির দাম। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম তাই দাম একটু বেশি।

এক ক্রেতা বলেন, “মাছের দাম মৌসুমেও কমেনি। আগের মতোই দামে কিনতে হচ্ছে। ইলিশের দাম তো নাগালের বাইরে।” বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টির কারণে ক্রেতার আনাগোনা কম, তবে দাম অপরিবর্তিত।

অন্যদিকে, গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। বাজারগুলোতে এক কেজি ওজনের ইলিশ ২৪০০/ ২৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

 

এক কেজি শিং মাছ (চাষের, আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকায়, দেশি শিং ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, চাষের পাঙ্গাস ২০০ থেকে ২৩৫ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১৪০০ টাকায়, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায়, বড় কাতল ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকায়, পোয়া মাছ ৫০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ২৫০ টাকায়, কৈ মাছ ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস কেজি প্রতি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায় এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দেশি আদা কেজিতে ৬০ টাকা কমে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা, রসুন দেশি ১০০ টাকা এবং ইন্ডিয়ান ১৪০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১৬০/ ১৭০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা এবং খেসারির ডাল ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৭২ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্রি-২৮ চাল ৬২ টাকা ও মোটা ধরনের স্বর্ণা চাল ৫৮-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ১১০ টাকা এবং সোনালি কক মুরগির ডিম হালি ৭০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

ক্রেতারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ থাকলেও দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। একজন ক্রেতা বলেন, “মাছ, মুরগি বা সবজি—কোনো কিছুই নাগালে নেই। বাজারে গেলে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়।” বিক্রেতারা জানান, পাইকারি বাজারে দাম বেশি হওয়ায় খুচরা বাজারেও দাম বাড়ছে। তারা আরও দাবি করেন, পূজার কারণে ইলিশের সরবরাহ কমে গেছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি এবং মধ্যস্থতাকারীদের নিয়ন্ত্রণে না আনলে দাম কমার সম্ভাবনা কম। নিম্ন ও মধ্যবিত্তের জন্য বাজার এখনো চ্যালেঞ্জিং।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED