বরগুনার এক উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ- অচল ৩৯ সেতু
বরগুনা প্রতিনিধি ।।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ ৩৯টি সেতুর জন্য ভোগান্তির শিকার হচ্ছে কয়েক লাখ মানুষ। সেতুগুলোর বেশির ভাগই সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এগুলোর ওপর হালকা যানবাহন উঠলেও কেঁপে ওঠে। রয়েছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। তবু উপায় না পেয়ে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সেতুগুলো দিয়ে। কোথাও পার হতে হচ্ছে নৌকায়। এদিকে কিছু সেতু ভেঙে খালে পড়ে গেলেও সেখানে কোনো সতর্কবার্তা টানানো হয়নি।
পাথরঘাটা এলজিইডি কার্যালয়ের তথ্যমতে, উপজেলায় লোহার ও পাকা মিলে শতাধিক সেতু রয়েছে। এর মধ্যে সদর ইউনিয়নের পাঁচটি, চরদুয়ানীতে ছয়টি, কালমেঘায় সাতটি, কাকচিড়ায় চারটি, কাঁঠালতলীতে ৯টি, নাচনাপাড়ায় সাতটি এবং রাহহানপুর ইউনিয়নের একটি সেতু এখন সম্পূর্ণভাবে অনুপযোগী ও মেরামতের অযোগ্য। এগুলো ১৯৯৭ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে নির্মিত। প্রায় দুই দশক ধরে সংস্কার না হওয়ায় সেতুগুলো এখন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। সেতুগুলোর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২ হাজার ৩৫৮ দশমিক ৫ মিটার।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কাকচিড়া ইউনিয়নের রূপধন বাজারে একটি সেতু দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। কর্তৃপক্ষের কোনো পদক্ষেপ না থাকায় স্থানীয়রা নিজেরাই বাঁশের সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত করছেন। স্থানীয়রা বলছেন, রূপধন এলাকায় প্রচুর আলু উৎপাদন হয়। কিন্তু সেতুটি অনুপযোগী থাকায় কৃষকদের উৎপাদিত আলু ঠিকমতো বাজারজাত করা যাচ্ছে না। ফলে তাঁদের কম দামে বিক্রি করে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।
নাচনাপাড়া ইউনিয়নের নাচনাপাড়া বাজারের উত্তর পাশে মাঠবাড়িয়া ও পাথরঘাটা উপজেলার সংযোগকারী একটি কাঠের ব্রিজ অনেক আগেই ভেঙে গেছে। পরে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে সাঁকো তৈরি করে। সম্প্রতি জোয়ারের চাপে সেটিও ভেঙে পড়েছে। বর্তমানে দুপাশের মানুষ বাধ্য হয়ে নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই দ্রুত এসব সেতুর সংস্কার ও নতুন করে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
পাথরঘাটা উপজেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী সমীরন মন্ডল জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ৩৯টি সেতুর তালিকা তৈরি করে পুনর্নির্মাণের জন্য বাজেট প্রস্তাব আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে সেতুগুলো সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
Post Comment